কোটালীপাড়ায় ইউএনও এর চিঠি জালিয়াতি” ছাত্রলীগ নেতার


গোপালগঞ্জ সড়ক বিভাগের আওতাধীন কোটালীপাড়া – রাজৈর (জেড- ৮০৩২) সড়কের চেইনজ ০৭+৭০০ মিঃ হতে ১৭+১৪০ মিঃ রাধাগঞ্জ – ফুলগাছা পর্যন্ত সড়কের দুই পাশ্বে অবস্থিত গণউন্নয়ন প্রচেষ্ট কতৃক বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির সহায়তায় কোটালীপাড়া উপজেলার অংশে রোপিত গাছ অপসারণ চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌস ওয়াহিদ এর চিঠি জালিয়াতি করে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি প্রেরণ করেছেন সাবেক ভিপি ও কোটালীপাড়া পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি চৌধুরী সেলিম আহম্মেদ ছোটন।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, রাজৈর – কোটালীপাড়া সড়কের কলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যন্ত ৪.৩ কিলোমিটার অংশ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির অধীন ত্রিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে ১৩৪৫ টি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপণ করা হয়। তার মধ্যে জীবিত ১২৪৫ টি গাছ বন বিভাগ কতৃক ২০১৭ সালে ৭১ লক্ষ ২৪ হাজার ৬২৪ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু তৎকালীন উক্ত গাছগুলো অপসারণ করা হয়নি। বর্তমানে সড়কটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সংসদীয় আসনভুক্ত এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত প্রতিনিধি মোঃ শহীদ উল্লাহ খন্দকার কয়েক দফায় সড়কটির উন্নয়ন কাজ করার জন্য মৌখিক ভাবে তাগিদ প্রদান করেছেন।
তাই সড়কটির উন্নয়ন / সংস্কার কাজ করার লক্ষ্যে সড়কের দুই পার্শ্বে অবস্থিত গাছ সমূহ কর্তণসহ অপসারণ করা অতি জরুরি। এমতাবস্থায় ২০১৭ সালে প্রাক্কলিতমূল্যে বর্তমান সময়ে উক্ত সড়কে বিদ্যমান ১২৪৫ টি গাছ টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রয়ের বিষয়ে মতামতের জন্য ইউএনও এর চিঠি জালিয়াতি করে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে কোটালীপাড়া পৌর শাখার সভাপতি চৌধুরী সেলিম আহম্মেদ ছোটন একটি চিঠি প্রেরণ করেন।
এ বিষয়ে কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন – গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে আমাকে টেলিফোনের মাধ্যমে বিষয়টি অবগত করছেন। এ প্রেক্ষিতে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছি গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, উপপরিচালক, স্থানীয় সরকার, গোপালগঞ্জ মহাদয়কে স্মারক নং ০৫.৩০.৩৫৫১.১৩.০০.০০১.২০২২-৩৪৪ এবং গাছ অপসারণ এর বিষয়ে ১০.০৪.২৩ ইং তারিখে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর কোন পত্র প্রেরণ করা হয়নি। প্রতিবেদন থেকে আরো জানা যায়, নথি যাচাইঅন্তে দেখা যায় গোপালগঞ্জ সড়ক বিভাগের আওতাধীন কোটালীপাড়া – রাজৈর (জেড- ৮০৩২) সড়কের চেইনজ ০৭+৭০০ মিঃ হতে ১৭+১৪০ মিঃ রাধাগঞ্জ – ফুলগাছা পর্যন্ত সড়কের দুই পাশ্বে অবস্থিত গণউন্নয়ন প্রচেষ্ট কতৃক বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির সহায়তায় কোটালীপাড়া উপজেলার অংশে রোপিত গাছ অপসারণ বিষয়ে মতামত প্রদানের নিমিত্ত বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, সামাজিক বন বিভাগ, ফরিদপুর বরাবর একটি পত্র প্রদান করা হয়।
কিন্তু সাবেক ভিপি ও কোটালীপাড়া পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি চৌধুরী সেলিম আহম্মেদ ছোটন স্মারকের পত্রটির প্রাপক পরিবর্তন করে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, সামাজিক বন বিভাগ, ফরিদপুর এর স্থলে জেলা প্রশাসক গোপালগঞ্জ বসিয়ে ফটোকপি করে উপপরিচালক, স্থানীয় সরকার, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নিকট দাখিল করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌস ওয়াহিদ প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করে বলেন, এ প্রেক্ষিতে সাবেক ভিপি ও কোটালীপাড়া পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি চৌধুরী সেলিম আহম্মেদ ছোটনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি দায় স্বীকার করেন এবং লিখিত একটি মুচলেকা প্রদান করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এর আগেও সাবেক ভিপি ও কোটালীপাড়া পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি চৌধুরী সেলিম আহম্মেদ ছোটন সুইচ গেটের মোট ৩ টি শীট পাইল বে – আইনি ভাবে উঠিয়ে বিক্রির চেষ্টা করে।
পরে জানাজানি হলে নির্বাহী প্রকৌশলী, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড গোপালগঞ্জ বরাবর ৩ টি শীট পাইল জমা দেয়। পরে একটি অঙ্গীকার নামা জমা দেয় যে ভবিষ্যৎতে এমন কোন বেআইনি মূলক কার্যক্রমে লিপ্ত হবো না। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে কমিউনিটি ক্লিনিক, পূরাতন প্রাইমারি স্কুল ভবন, ব্রিজ টেন্ডার ছাড়া ভাঙ্গার অনেক অভিযোগ রয়েছে। এঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান মুন বলেন, কোন সরকারি কর্মকর্তার চিঠি বা স্বাক্ষর জালিয়াতি করা বে আইনি , আমি এখনো এ ব্যপারে কিছু জানিনা, যদি আমাদের কাছে এ ব্যাপারে কোন অভিযোগ আসে তাহলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।।