বাগেরহাটের চিতলমারীতে সরকারী বন্দোবস্তকৃত জায়গা বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। বিক্রেতা উত্তম কুমার সাহা (৫৯) ওই জায়গা ১৬ লাখ টাকায় বিক্রি করে গা ঢাকা দিয়েছেন। ক্রেতা মুরাদ মুন্সি (৩৬) ওই জায়গায় নির্মিত দোকান ঘরে ওঠার আগেই অন্য একটি পক্ষ সার্টারে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন। এ নিয়ে সদর বাজারে উত্তেজনা বিরাজ করছে। আর এ ঘটনাকে নিয়ে এলাকায় একটা কথাই চাউর হচ্ছে, ‘জায়গা সরকারের, বিক্রি করল পাবলিক। তালা মারল অন্য লোক।’
বাজারের সওদাগার (বেদে) পট্টির ব্যবসায়ীরা জানান, ২০ থেকে ২২ বছর আগে চিতলমারী বাজারের মনোরঞ্জন সাহার ছেলে উত্তম কুমার সাহা সওদাগার পট্টির একটি খাস জায়গা সরকারের কাছ থেকে বন্দোবস্ত নিয়ে ব্যবসা করে আসছিলেন। গত ১৮ ডিসেম্বর ওই জায়গা দোকান ঘরসহ ১৬ লাখ টাকায় উত্তম সাহা উপজেলার খড়মখালী গ্রামের আব্দুর রব মুন্সির ছেলে মুরাদ মুন্সির কাছে বিক্রি করে গাঢাকা দিয়েছেন। উত্তম সাহা গাঢাকা দেয়ার পর থেকে পাওনাদাররা ওই দোকান ঘরে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন। এ ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। আর এ ঘটনাকে নিয়ে এলাকায় একটা কথাই চাউর হচ্ছে, ‘জায়গা সরকারের, বিক্রি করল পাবলিক। তালা মারল অন্য লোক।’
ওই ব্যবসায়ীরা আরও জানান, এ ধরণের বহু বন্দোবস্তকৃত সরকারি জায়গা কেনাবেচা হয়েছে। যা প্রশাসন খবর নিলে ‘কেঁচো খুঁড়তে বেরিয়ে আসবে কেউটে’। ঘটনার পর থেকে উত্তম সাহা সপরিবারে পলাতক ও তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় কোন বক্তব্য পাওয়ানি। নাম না প্রকাশ করার শর্তে ওই দোকানে তালা লাগানো এক ব্যাক্তি স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, আমি উত্তম সাহার কাছে টাকা পাব। উত্তম জায়গা বিক্রি করে পালিয়েছে শুনে আমি টাকা পাওয়ার জন্য তালা লাগানো দোকানে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। আমার সাথে আর কোন ঝামেলা নেই।
এ ব্যাপারে মুরাদ মুন্সি বলেন, দোকানসহ জায়গা কিনেছে এটা লেখা যাবে না। আমি উত্তম সাহার কাছ থেকে দোকান ভাড়া নিয়েছি। এ ঘটনার মধ্যস্থতাকারী স্থানীয় একটি মাদ্রসার শিক্ষক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি মধ্যস্থতা করেছি। জমি রেজিষ্ট্রি করা যায়নি। ওই দোকানসহ জায়গা ১০ লাখ টাকা অগ্রীম দিয়ে মাসিক ৪ হাজার টাকা ভাড়ায় স্ট্যাম্পে চুক্তিপত্রের মাধ্যমে মুরাদ নিয়েছে।
তবে মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) দুপরে চিতলমারী সহকারী কমিশনার (ভুমি) জান্নাতুল আফরোজ স্বর্ণা মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি আমরা জানি না। সরকারি বন্দোবস্তকৃত জায়গা বিক্রি বা অন্যত্র ভাড়া দেওয়ার কোন নিয়ম নেই। যদি এরকম হয়ে থাকে তাহলে আমরা অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।