কর্মস্থলে প্রতিনিয়ত না এসেই প্রায় ৬ বছরের বেশি সময় ধরে সরকারি বেতন নিচ্ছেন মাদরাসার অফিস সহকারী হাদিউজ্জামান। অভিযোগ রয়েছে মাদরাসায় তার কাজ করার জন্য তিনি কিছু বেতন দিয়ে রেখেছেন একজন কর্মচারী। আর প্রতি মাসে হাদিউজ্জামান তুলছেন বেতন। । তবে প্রতিষ্ঠান প্রধান বলছেন, অফিস সহকারী ঠিক মত না থাকলেও তার বদলে পার্টটাইম একজন দায়িত্ব পালন করছেন। ফলে তেমন কোন সমস্যা হচ্ছে না। ঘটনাটি ঘটেছে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার বলুহার ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলায় অবস্থিত বলুহার ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা ১৯৯৯ সালে স্থাপিত ও ২০১০ সালে এমপিও ভুক্ত হয়। মাদরাসাটিতে ২৪৮ জন প্রায় শিক্ষার্থীর বিপরীতে রয়েছে ১৪ জন শিক্ষক ও ৬ জন কর্মচারী। চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর মধ্যে রয়েছে একজন আয়া, একজন পরিচ্ছন্ন কর্মী ও দুইজন নিরাপত্তা প্রহরী । মাদ্রাসাটি শুরু লগ্ন থেকে থেকে অফিস সহকারী হিসেবে নিয়োগ পান মোঃ হাদিউজ্জামান-(৪৫)। হাদিউজ্জামান মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মৃত হানিফের আপন ভাই। অফিস সহকারী মোঃ হাদিউজ্জামান ২০১৭ সাল থেকে মাদরাসাটিতে নিয়মিত অফিস না করে প্রতি মাসে তুলে নিচ্ছেন বেতন এবং তার অফিস সহায়ক কাজের জন্য মোঃ রাজিবুল ইসলাম নামে একজনকে দিয়ে পার্টটাইম সল্প বেতনে কাজ করান।

জানা যায়, অফিস সহকারীর বড় ভাই অত্র প্রতিষ্ঠানের সভাপতি এবং অন্য ভাই আশরাফুজ্জামান ঝন্টু অত্র মাদরাসার শিক্ষক ও কোটালীপাড়া পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সাহস পাননা। এমনকি শিক্ষার্থীরা কেউ তাকে বাংলা শিক্ষক হিসেবে জানে আবার অধিকাংশ শিক্ষার্থী তাকে চিনেন না কে হাদিউজ্জামান। এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়- তিনি একজন ঠিকাদার, ঔষধ ফার্মেসীর মালিক, একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী সহ বিভিন্ন ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছে।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে অনেকের অভিযোগ হাদিউজ্জামান এতোগুলো ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত থাকায় তিনি কিভাবে অত্র মাদরাসায় অফিস সহকারী পদে দায়িত্ব পালন করেন। এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে হাদিউজ্জামান বলেন, আমি নিয়মিত মাদরাসায় এসে হাজিরা দিয়ে যাই আর রাজিবুল নামে একজনকে দিয়ে কাজ করাই। এ ব্যাপারে রাজিবুল ইসলাম কোন কিছু বলতে রাজি হয় নাই।

এ ঘটনায় মাদরাসার সুপার মোঃ কবিরুল ইসলাম সত্যতা স্বীকার করে বলেন- হাদিউজ্জামান নিয়মিত না আসলেও রাজিবুল নামে যাকে রাখা হয়েছে তাকে মাদরাসার পক্ষ থেকে ও হাদিউজ্জামান এর পক্ষ থেকে তাকে কিছু বেতন দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ সিদ্দিক নুর আলম বলেন- বিষয়টি জানতে পেরেছি তদন্ত করে বিধিমতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন – সরকারি কোন কর্মচারী এভাবে কার্যক্রম করতে পারবে না, এটা আইনানুগ কোন নিয়ম নেই , তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।