বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য দেশের ১৯ জন বিশিষ্ট নাগরিক ও ২টি প্রতিষ্ঠানকে ২০২৩ সালের একুশে পদক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। রোববার সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এবারের একুশে পদক পুরস্কারের জন্য যারা মনোনীত হয়েছেন, তাদের মধ্যে (রাজনীতিতে) রয়েছেন গোপালগঞ্জ জেলার কৃতি সন্তান কাশিয়ানী উপজেলার রাতইল ইউনিয়নের ঘোনাপাড়া গ্রামের মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আকতার উদ্দিন মিয়া (মরণোত্তর)।
১৯২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর জন্মনেওয়া আক্তার উদ্দিন জাতির পিতার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ট সহচর ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের মূল সংবিধানে স্বাক্ষরদাতাও । ১৯৭০ ও ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত এমপির দায়িত্ব পালন করেন। তাছাড়াও ২য় বিশ্বযুদ্ধের রনাঙ্গণের সৈনিক,বঙ্গবন্ধুর ফিল্ড মার্শাল মন্টোগোমারি ও গোপালগঞ্জ মহাকুমা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ও ছিলেন তিনি।
২৮ শে সেপ্টেম্বর ১৯৮৪ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের একান্ত সহচর বীর মুক্তিযোদ্ধা আখতার উদ্দিন মিয়া এমপি (সাবেক) মারা যান তিনি। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কৃতি সন্তানের তালিকায় তার নাম গোপালগঞ্জে উল্লেখযোগ্য। মৃত্যুকালীন সময়ে স্ত্রী সহ ৩ পুত্র রেখে যান।বড় ছেলে মুনির হাসান বর্তমানে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক গোপালগঞ্জ শাখার ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। মেজো ছেলে মৃত আলী হোসেন পনি রাজবাড়ী যুবলীগের সভাপতি ছিলেন।
ছোট ছেলে রকিব রনি বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কর্মরত আছেন। এছাড়াও এবারের একুশে পদক পুরস্কারের জন্য যারা মনোনীত হয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এ. কে. এম. শামসুল হক (মরণোত্তর), অভিনেতা মাসুদ আলী খান ও শিমুল ইউসুফ, সাংবাদিক মো. শাহ আলমগীর (মরণোত্তর), চিত্রশিল্পী কনক চাঁপা চাকমা, আবৃত্তিকার জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। ভাষা আন্দোলনে অবদানের জন্য মনোনয়ন পেয়েছেন খালেদা মনযুর-ই-খুদা, বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম শামসুল হক (মরণোত্তর) ও হাজী মো. মজিবর রহমান। শিল্পকলায় (অভিনয়) মাসুদ আলী খান ও শিমুল ইউসুফ, শিল্পকলায় (সংগীত) মনোরঞ্জন ঘোষাল, গাজী আব্দুল হাকিম ও ফজল-এ-খোদা (মরণোত্তর), শিল্পকলায় (আবৃত্তি) জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, শিল্পকলায় নওয়াজীশ আলী খান, শিল্পকলায় (চিত্রকলা) কনক চাঁপা চাকমা। মুক্তিযুদ্ধে মমতাজ উদ্দীন (মরণোত্তর), সাংবাদিকতায় মো. শাহ আলমগীর (মরণোত্তর), গবেষণায় ড. মো. আবদুল মজিদ, শিক্ষায় প্রফেসর ড. মযহারুল ইসলাম (মরণোত্তর), সমাজসেবায় মো. সাইদুল হক, রাজনীতিতে অ্যাডভোকেট মঞ্জুরুল ইমাম (মরণোত্তর) ও আকতার উদ্দিন মিয়া (মরণোত্তর) এবং ভাষা ও সাহিত্যে মনোনয়ন পেয়েছেন ড. মনিরুজ্জামান (মরণোত্তর)। আর একুশে পদকের জন্য মনোনীত দুটি প্রতিষ্ঠান হলো: শিক্ষায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ও সমাজসেবায় অবদানের জন্য বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন।
একুশে পদক বাংলাদেশের বেসামরিক নাগরিকদের জন্য রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দেয়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা। মহান ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো একুশে পদক দেয়া শুরু হয় ১৯৭৬ সালে। পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে একটি আঠারো ক্যারেটের স্বর্ণপদক, এককালীন অর্থ (চেক) ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়।