ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানের অভিযোগে গোপালগঞ্জে ভুক্তভোগীর স্বজনদের সংবাদ সম্মেলন

ইয়াবা দিয়ে সুমন গাজী নামের এক যুবককে ফাঁসানোর অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীর স্বজনেরা।

সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গোপালগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী সুমন গাজীর ছোট বোন খাদিজা আক্তার ও তার ভাই মো. বটু গাজী। এসময় তার বোন লুবা বেগম, উরফি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন গাজী, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কালাম গাজী সহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, আমার ভাই ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে সচিবালয়ে গণপূর্ত বিভাগে ইলেকট্রিক হেলপার পদে যোগদান করেন। ওই দপ্তরে বৈদ্যুতিক ক্যাবল ও ফ্যান চুরির ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থাকার বিষয়ে আইয়ূব আলী ও তার ভাই বকুল মিয়ার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া নিয়ে আমার ভাই সুমন গাজীর বিরোধ শুরু হয়। পরে ওই তথ্য সরবরাহের অভিযোগ এনে চলতি মাসের ১ তারিখে আমার ভাই সুমন গাজীকে মারপিট করে আইয়ূব আলী ও তার ভাই বকুল মিয়া। এবিষয়ে ওই দিন সুমন গাজী রাজধানীর শাহাবাগ থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করে (যাহার নং-২৭, তারিখ-১ সেপ্টেম্বর ২০২২)। সাধারন ডায়েরি করায় তারা সুমনের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং প্রতিশোধ নিতে বিভিন্ন ষড়ষন্ত্রে লিপ্ত হয়। গত ১৯ সেপ্টেম্বর বিকাল ৪ টায় অফিস থেকে ম্যাসে ফেরার পথে র‌্যাব-১ এর সদস্যরা সুমনকে তুলে নিয়ে যায় উত্তরার র‌্যাব-১ কার্যালয়ে। ওই দিন সুমনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করতে না পেরে পরিবারের লোকজন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করি। কোথাও তার সন্ধান না পেয়ে ২০ সেপ্টেম্বর পল্টন মডেল থানায় নিখোঁজ সংক্রান্তে একটি সাধারণ ডায়েরি করি (যাহার নং-১৪২৫)। পরে জানতে পারি সুমন গাজী শাহাবাগ থানায় আছে।

তার নামে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে দুই হাজার পিছ ইয়াবা দিয়ে শাহাবাগ থানায় একটি মাদক মামলা দিয়েছে র‌্যাব-১। পরে শাহাবাগ থানায় গিয়ে ভাইয়ের সাথে কথা বলে জানতে পারি আগের দিন (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪ টায় কয়েকজন লোক সাদা পোশাকে তাকে তুলে নিয়ে যায়। তারা র‌্যাব-১ এর সদস্য। উল্লেখ্য, আমার ভাই জীবনে কোনদিন ধূমপান বা কোন প্রকার নেশা জাতীয় দ্রব্য পান করেনা। খাদিজা আক্তার আরো বলেন, পুলিশ কর্তৃক প্রাপ্ত ভিডিও ফুটেজে সুস্পষ্ট ভাবে দেখা যাচ্ছে, চুরির ঘটনায় সচিব কর্তৃক চাকুরীচ্যুত আইয়ূব আলী সহ অজ্ঞাতরা র‌্যাব-১ এর সদস্য কর্তৃক আমার ভাইকে জোর করে মাইক্রোবাসে তুলে নেওয়ার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলো। আর ১৯ সেপ্টেম্বর বিকাল ৪ টা থেকে ২০ তারিখ সন্ধ্যা পর্যন্ত র‌্যাব-১ হেফাজতে থেকে উল্লিখিত ঘটনা স্থলে কিভাবে আমার ভাই মাদক বিক্রি করতে গেল? সাংবাদিক ভাইয়েরা আপনারা জাতির বিবেক, আপনাদের মাধ্যমে আমরা সত্য উদঘাটিত হোক সেটা চাই।

আমার ভাই দোষী হলে সে শাস্তি পাক। যদি সে নির্দোষ হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে এই ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহার করে সত্য উদঘাটন করে প্রকৃত অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদানের দাবি জানাচ্ছি। সুমন গোপালগঞ্জ সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজে মাস্টার্সে ভর্তি হয়ে লেখা-পড়ার খরচ যোগাতে মাস্টার রোলে চাকুরী নেয়। চাকুরীটি গণপূর্তের সদ্য সাবেক সচিব মো. শহীদুল খন্দকার সরকার দিয়ে দেন। এছাড়াও সে বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। আমার ভাই সুমন গাজীর বিরুদ্ধে দেওয়া ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার সহ সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, গোপালগঞ্জ-২ আসনের বারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম ভাই সহ সমস্ত গোপালগঞ্জ বাসীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *