ইজিপিপি তালিকায় ইউপি সদস্যের স্ত্রী খাদ্যবান্ধাব কর্মসূচিতে অনিয়মের অভিযোগ


রফিক হাওলাদার দিনমজুর। মা, স্ত্রী ও ছেলে মেয়ে নিয়ে তাঁর সংসার। জমিজিরাত বলতে ২৮ বসবাসের জায়গা টুকুন। হতদরিদ্র হিসেবে ২০১৬ সালে তিনি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে হতদরিদ্র ব্যক্তিদের ভোক্তা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন। কচুয়া উপজেলার ১ নং গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ০৭ নং ওয়ার্ডের (ইউপি) সদস্য মোঃ জাহাঙ্গীর হাওলাদার তাঁকে হতদরিদ্র হিসেবে শনাক্ত করেছিলেন। প্রথম দিকে কয়েকবার চাল উত্তোলন করতে পারলেও পরবর্তীতে আর পাননি ভুক্তভোগী রফিকুল।
অদ্যাবধি তালিকাভুক্ত রয়েছেন রফিকুল হাওলাদার যাহার ক্রমিক নম্বর – ১৬৩৯ মাদারতলা গ্রামের একই ওয়ার্ডের দিনমজুর জাহাতাফ মোল্লা বলেন, ‘১০ টাকা কেজি দরের চালের কার্ড আমার ও ছিলো হঠাৎ একদিন জাহাঙ্গীর মেম্বর বলেন আমার কার্ড বাতিল হয়ে গেছে। বাতিল হওয়ার খবর শুনে গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদে গিয়েছিলাম। ওখান থেকে জানিয়েছে কার্ড বাতিল হয়নি তবুও আমি আর চাল পাইনি , অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। এখন পর্যন্ত আমার চাল দেওয়ার সময় আমার নাম ডাকা হয় কিন্তু চাল আমি পাইনা।
ভুক্তভোগীর ক্রমিক নম্বর – ১৬৩৭ একই ওয়ার্ডের আরেকজন ভুক্তভোগী ইউছুব আলী হাওলাদার, পিতা মৃত্যু নকিতুল্লাহ হাওলাদার। ২০১৬ সালে হতদরিদ্রের তালিকাভুক্ত হন তিনি। অনুসন্ধানে জানা যায় গত ৪ বছর আগে তিনি মৃত্যু বরণ করলেও অদ্যাবধি তালিকাভুক্ত রয়েছেন ইউছুফ আলী হাওলাদার। এব্যাপারে তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে যে, মৃত্যু ইউছুব আলী বেঁচে থাকাকালীন তিনি চাল পেয়েছেন, আর তখন তার পারিবারিক অবস্থাও ভালো ছিলোনা। এখন তার ছেলেরা চাকুরী করে এখন আর প্রয়োজন হয়না এবং চাল উত্তোলনও করেন না।
এবং কে উত্তোলন করে তাও তাদের জানা নেই। মৃত্যু ইউছুব আলী হাওলাদার এর ক্রমিক নম্বর – ১৫৯২ অনুসন্ধান চলাকালীন সময়ে মৃত্যু ইউছুব আলী হাওলাদার এর বাড়িতে উপস্থিত হন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বর জাহাঙ্গীর হাওলাদার। এবিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন এটা পুরাতন তালিকা, এসময় অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর হাওলাদার এর কাছে নুতন তালিকা দেখতে চাইলে তার কাছে তালিকা নেই বলে জানান। তাৎক্ষণিক অভিযুক্ত মেম্বর কে সাথে নিয়ে গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদে গেলে জাহাঙ্গীর হাওলাদার এর কথা মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়, এবং ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন শেখ এর অজান্তেই তিনি এগুলো করেছেন বলে জানান। এদিকে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি (ইজিপিপি) তালিকায় রয়েছেন ৭ নং ওয়ার্ড মেম্বর জাহাঙ্গীর হাওলাদার এর স্ত্রী (জব কার্ড নম্বর-৪০০১৩৮৩৮০০৩৫৪) ও ভাগ্নে(জব কার্ড নম্বর- ৪০০১৩৮৩৮০০১৮৮) সহ একই পরিবারের একাধিক সদস্য।
রাস্তার বাধ নির্মাণ কাজে নাম থাকলেও কাজ না করেই টাকা উত্তোলন করে আসছে মাসের পর মাস। এছাড়াও অনেকের নাম রয়েছে ঠিকই কিন্তু বাস্তবে কাজ না করা সত্ত্বেও দৈনন্দিন হাজিরা দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করার অভিযোগ রয়েছে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর হাওলাদার এর নামে। স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায় ইউপি সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে নিরব ঘাতকের ভূমিকায় রয়েছে এই ইউপি সদস্য। যেকোনো ধরনের কার্ড বানিজ্য সহ নানামুখী অভিযোগ উঠেছে জাহাঙ্গীর হাওলাদার এর বিরুদ্ধে।