এক সপ্তাহ পরেই এপ্রিল শেষ হবে। তবে এখনো গত মাসের মজুরি পরিশোধ করেনি গাজীপুর, সাভার-আশুলিয়া, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও খুলনার ২৯৪ পোশাক ও বস্ত্র কারখানা। তার মধ্যে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর ১৫৭টি, নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ ১০৬টি এবং বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বিটিএমএর সদস্য কারখানার সংখ্যা ৩১টি।
শিল্প পুলিশ আজ মঙ্গলবার মজুরি পরিস্থিতির এই হালনাগাদ তথ্য দিয়েছে। অবশ্য বিজিএমইএ দাবি করেছে, ১১০ কারখানার মজুরি বাকি রয়েছে। ৯৫ দশমিক ১৬ শতাংশ কারখানা ইতিমধ্যে শ্রমিকের মজুরি পরিশোধ করেছে।
শিল্প পুলিশ জানায়, গাজীপুর, সাভার-আশুলিয়া, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও খুলনায় মোট ৭ হাজার ৭০০ শিল্প কারখানার রয়েছে। তার মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৬ হাজার ৮৮৩টি মজুরি দিয়েছে। মজুরি পরিশোধ করেনি ৮১৭টি শিল্প কারখানা। তবে তাদের কাছে ঢাকা মহানগরীর তথ্য নেই।
শিল্প পুলিশের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর, সাভার-আশুলিয়া, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও খুলনায় বিজিএমইএর সদস্য কারখানা রয়েছে ১ হাজার ৯১৫টি। তার মধ্যে ১ হাজার ৭৫৮ কারখানা মজুরি দিয়েছে। এসব এলাকায় বিকেএমইএর সদস্য ১ হাজার ১০১টি কারখানার মধ্যে ৯৯৫টি মজুরি পরিশোধ করেছে। অন্যদিকে বিটিএমএর সদস্য ৩৮৯ বস্ত্রকলের মধ্যে মজুরি দিয়েছে ৩৫৮টি।
বিজিএমইএর সদস্য কারখানার সংখ্যা ৪ হাজার ৬২১টি। তার মধ্যে সরাসরি রপ্তানি করে ২ হাজার ২৭৪টি। আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত ২ হাজার ১৬৪টি কারখানা মজুরি পরিশোধ করেছে। তাতে ৯৫ দশমিক ১৬ শতাংশ কারখানা ইতিমধ্যে শ্রমিকের মজুরি দিয়েছে।
সরাসরি রপ্তানি করে না, বিজিএমইএর এমন সদস্য কারখানার সংখ্যা ২ হাজার ৩৪৭টি। সংগঠনটি কারখানাগুলো মজুরি পরিশোধের তথ্য দেয়নি। তবে বলেছে, কারখানাগুলো রপ্তানিকারকদের কাছ থেকে ইন্টার বন্ডের মাধ্যমে সাবকন্ট্রাকটিং বা ঠিকায় কাজ করে। রপ্তানিকারক যখন নিজের কারখানায় মজুরি পরিশোধ করে তখন সাবকন্ট্রাকটিং প্রতিষ্ঠানেও কোনো সমস্যা হয় না।
মজুরি না পেয়ে শ্রমিকেরা বর্তমান অমানবিক জীবনযাপন করছেন বলে দাবি করেন শ্রমিকনেতা সিরাজুল ইসলাম রনি। তিনি আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ সব সময়ই ছোট কারখানাগুলোর বিষয়ে দায়-দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে চায়। তাদের উদাসীনতার কারণেই প্রায় আড়াই শ কারখানার শ্রমিক এখনো মজুরি পায়নি।
প্রত্যেক মাসের ৭ কর্মদিবসের মধ্যে পূর্ববর্তী মাসের মজুরি পরিশোধ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ করোনার কারণে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ১৬ এপ্রিলের মধ্যে মজুরি দিতে কারখানা মালিকদের নির্দেশনা দেয়। তবে শেষ পর্যন্ত সেটি মানেনি অনেক কারখানা মালিক।