ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধিঃ জাহাঙ্গীর আলম
নবীনগরের বহুল আলোচিত সেই ধর্ষণ ও অপহরণ মামলার বাদী শিল্পী আক্তার। পুলিশের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক সাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ করে ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই এবার রহস্যজনক কারণে তার সুর পাল্টালেন তিনি। বাদী (শিল্পী) গতকাল ১৫ই জুন সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে অপহরণকারীদের হুমকিতে সাংবাদিকদের কাছে পুলিশের বিরুদ্ধে জোরপূর্বকভাবে সাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন বলে জানান।
সাংবাদিক সম্মেলনে বহুল আলোচিত ওই ধর্ষণ ও অপহরণ মামলার বাদী শিল্পী আক্তার তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘আমি মামলা করতে চাই না, পুলিশই জোর করে আমাকে মামলা করতে বাধ্য করেছে, এগুলো আসলে তাদের (অপহরণকারীরা) শিখানো কথা ছিল। আমি ওই সময় এসব কথা সাংবাদিকদের না বললে আমাকে ওরা মেরে ফেলত। তাই তখন সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলতে বাধ্য হয়েছি। আমি আসলে নিজের ইচ্ছাতেই মামলা করেছিলাম।
শিল্পী আক্তার আরো বলেন, মূলত আমার মেয়েকে অপহরণকারীর বড় ভাই স্থানীয় সাংবাদিক বর্ষণ বাবুল ভয়ভীতি দেখিয়ে আমাকে দিয়ে আগের কথাগুলো সাংবাদিকদের কাছে বলাতে বাধ্য করেছিল। কথাগুলো আমার নিজের কথা ছিল না।
২৪ ঘণ্টা পার না হতেই বাদীর এই আকস্মিক রহস্যজনক সংবাদ সম্মেলন নিয়ে এখন এলাকায় নানা মুখরোচক আলোচনা চলছে। তবে এ বিষয়ে ধর্ষণ ও অপহরণ মামলার একমাত্র আসামি রিয়াদুল ইসলাম শান্তর বড় ভাই স্থানীয় সাংবাদিক বর্ষণ ফারহান বাবুল আজ সকালে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভয় ভীত আমি নই, মূলত: পুলিশ ও স্থানীয় সাংবাদিকদের একটি গ্রুপ ওই নারীকে দেখিয়েছেন।
যার ফলে ২৪ ঘণ্টা না পেরুতেই পুলিশ ও স্থানীয় সাংবাদিকদের একটি চিহ্নিত সিন্ডিকেট গ্রুপ যৌথভাবে মিলে সংবাদ সম্মেলনের নামে নতুন এই হাস্যকর নাটক সাজিয়েছে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত হলে এসব ষড়যন্ত্র বিনষ্ট হয়ে যাবে।’ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমানের কাছে সোমবার সকালে বিষয়টির একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে সাংবাদিক বর্ষণ একটি আবেদন করেছেন বলেও জানান আসামীর ভাই।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার আনিসুর রহমানের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেও কথা বলা যায়নি। প্রসঙ্গত, মামলা করতে রাজী না হওয়ার পরও পুলিশের এস আই নজরুল ইসলাম বাদীর কাছ থেকে জোরপূর্বকভাবে সাক্ষর নিয়ে অপহরণকারীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও অপহরণ মামলা করতে বাদীকে বাধ্য করেছিলেন বলে গতকাল সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছিলেন বাদী শিল্পী আক্তার।
এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘মিথ্যা মামলায় ফাঁসালেন পুলিশ ‘ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরই এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। এরপরই তড়িঘড়ি করে বাদীকে দিয়ে সোমবার এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।