কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ করিডোর দিয়ে মিয়ানমার থেকে আসছে গবাদিপশু। তবে এবার করোনাভাইরাসের কারণে পশুর ব্যবসা নিয়ে চিন্তায় রয়েছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। গত ৪ দিনে শাহপরীরদ্বীপ করিডোরে মিয়ানমার থেকে ৩ হাজার ৩৭৩টি গরু-মহিষ এসেছে।
টেকনাফ শুল্ক বিভাগের শুল্ক কর্মকর্তা মো আবসার উদ্দিন বলেন, সদ্যসমাপ্ত জুন মাসের ৫ হাজার ২১৩ টি গরু ও ৩ হাজার ৩১২টি মহিষসহ ৮ হাজার ৫২৫টি গবাদি পশু এসেছে। এসবের বিপরীতে ৪২ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকার রাজস্ব আদায় করা হয়েছে। এরমধ্যে আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে মিয়ানমার থেকে গবাদি পশু আনার জন্য স্থানীয় ব্যবসায়ীদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মিয়ানমার থেকে স্থানীয় ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম শহীদ, আবু ছৈয়দ, মোহাম্মদ সোহেল, আব্দুল শুক্কুর ও মোঃ আলমগীরের কাছে ৬৮২টি গরু-মহিষ এসেছে। এসব ট্রলার থেকে খালাসের পর করিডোরে খোলা জায়গায় রাখা হচ্ছে।
শুল্ক বিভাগ সূত্র জানায়, দেশে মাংসের চাহিদা পূরণ করতে তৎকালিন সরকার ২০০৩ সালে ২৫ মে এই করিডোরটি চালু করেন। এটি বৃহত্তর চট্টগ্রামের একমাত্র করিডোর। সারাবছর এ করিডোর দিয়ে গরু-মহিষ আসলেও এখন আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে শাহপরীরদ্বীপ করিডোর দিয়ে মিয়ানমার থেকে গবাদিপশু আসতে শুরু হয়েছে। এ করিডোর দিয়ে যেসব পশু আসছে তা দ্রুত হাত বদল বা কিনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে আসছেন।
শাহপরীরদ্বীপ করিডোরের পশু ব্যবসায়ী মোঃ আলমগীর জানান, এবার করোনাভাইরাসের কারণে ব্যবসা নিয়ে চিন্তায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। এরমধ্যে আসন্ন কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে প্রচুর পরিমাণের গরু-মহিষ আসার কথা রয়েছে। এবার কোরবানিতে ২০ হাজারের বেশি পশু আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে আবহাওয়া অনুকলে থাকার পাশাপাশি সাগরও শান্ত থাকতে হবে। কোনো ধরনের বাধা ছাড়া গবাদিপশু আসতে পারলে স্থানীয় লোকজন কম দামে গরু-মহিষ কিনতে পারবে।
পশু ব্যবসায়ীরা বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা পেলে এ করিডর দিয়ে কোরবানির ঈদের আগেদিন পর্যন্ত গবাদি পশু আনা হবে। শুধুমাত্র ঈদকে সামনের রেখে মিয়ানমারের ব্যবসায়ীদের কাছে আগাম লাখ লাখ টাকা দাদন দেওয়া হয়েছে। তবে কোরবানী আসতে এখনো ২৯ দিন বাকি রয়েছে।
টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো ফয়সাল হাসান খান জানান, মিয়ানমার থেকে আসা গবাদিপশু গুলো গণনা করার পরে বিজিবির হেফাজতে রাখা হয়। প্রতিটি গরু-মহিষের বিপরীতে ৫০০ টাকার রাজস্ব আদায়ের পরে পশুগুলো ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে গবাদি পশুর সঙ্গে যাতে মিয়ানমার থেকে কোনো ধরনের মাদকসহ অবৈধ কোনো কিছু আনা হলে জড়িত ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে সরাসরি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে সর্তক রয়েছে বিজিবির সদস্যরা।
ছাদ্দাম/দৈনিক শতবর্ষ