ময়মনসিংহের তারাকান্দায় ৮ মাস ধরে বেতন বন্ধ গ্রাম পুলিশের মানবেতর জীবনযাপন

বেতন

ময়মনসিংহের তারাকান্দায় আট মাস ধরে বেতন বন্ধ থাকায় গ্রাম পুলিশ ও তার পরিবারের সদস্যরা করছে মানবেতর জীবনযাপন। তারাকান্দা উপজেলার নির্বাহী অফিসারের বিরুদ্ধে ওই গ্রাম পুলিশের বেতনভাতা বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জমিসংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে এক নারীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বেতনভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন দীনেশ রবিদাস নামের ওই গ্রাম পুলিশ। বিগত ৮ মাস ধরে বেতনভাতা না পেয়ে করোনাকালীন সময়ে খেয়ে না খেয়ে পরিবার নিয়ে কোনোমতে বেঁচে আছেন তিনি। অর্থাভাবে তার ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখাও বন্ধ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বহেড়াকান্দি গ্রামের দীনেশ রবি দাস ৪নং গালাগাঁও ইউনিয়নের গ্রাম-পুলিশ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ভুক্তভোগী গ্রাম পুলিশের বাবা যমুনা রবি দাস একই গ্রামের রহিমা ও হালিমা খাতুনের কাছ থেকে ২৮ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। পৈত্রিক সূত্রে ক্রয়কৃত জমিতে বসতভিটা ও মন্দির নির্মাণ করেন তিনি। জমির দলিল সংশোধনের জন্য ২০১০ সালের ১১ জানুয়ারি ফুলপুর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন গ্রাম পুলিশের বাবা রবিদাস।

অপরদিকে জমি বিক্রেতার বোন মিনারা খাতুন নামে এক নারী আংশিক জমির মালিকানা দাবি করে তারাকান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার জান্নাতুল ফেরদৌসের শরণাপন্ন হন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ সময় দীনেশকে তার কার্যালয়ে ডেকে জমির মালিকানা ছেড়ে দিতে ও মামলা প্রত্যাহার করতে নির্দেশ দেন। দীনেশ আদালতের মাধ্যমে সঠিক বিচার পাওয়া যাবে বলে মামলা প্রত্যাহার করবেন না সাফ জানিয়ে দেন। এ সময় ইউএনও রাগান্বিত হয়ে দীনেশকে বড় ধরনের শাস্তির কথা জানান।

গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর ভুক্তভোগী গ্রাম পুলিশের বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। পরবর্তীতে ইউএনও ৬.১২.২০২০ থেকে ১৫.১২.২০২০ পর্যন্ত তারাকান্দা বাজারে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে ভবনের সামনে জাতির পিতার ম্যুরালের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োগ দেন। সারা রাত পাহাড়ায় থেকে দায়িত্ব পালন করেন। পরে গত বছরের আগস্ট থেকে চলতি মাস পর্যন্ত বেতন ভাতা বন্ধ করে দেন ইউএনও।

গ্রাম পুলিশ কোনো প্রতিকার না পেয়ে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের সুপারিশ নিয়ে গত ৪ এপ্রিল জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করলেও বেতন-ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। দীনেশ জানান, একমাত্র ছেলে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ও মেয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। কিন্তু অর্থের অভাবে খাবারও জোটে না লেখাপড়া কিভাবে করাব। জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, দীনেশ রবিদাসের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ ও বেয়াদবির-করার-কারণে তার বেতন-ভাতা বন্ধ রাখা হয়েছে।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *