বরিশাল শেবাচিমে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও নিহতের স্বজনদের সংঘর্ষ সমাধানে বিসিসি মেয়র

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত কলেজছাত্রের মৃত্যুর জেরে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

এ হামলার প্রতিবাদে ১১ জুন শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে হাসপাতালের সব গেট বন্ধ করে কর্মবিরতি শুরু করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এ কর্মবিরতির কারণে প্রায় এক ঘণ্টা বন্ধ ছিল সমগ্র হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম। এদিকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি ও হাসপাতালের ভর্তি আহত আরও দুই ছাত্রের চিকিৎসা বন্ধ রাখার প্রতিবাদে হাসপাতালের সম্মূখ্যের সড়ক (বান্দ রোড) অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন নিহতের তরুন-কিশোর সহপাঠী ও স্বজনরা।

ঘটনাটির তাৎক্ষনিক খবর পেয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ ঘটনাস্থলে গিয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসক, নিহতের সহপাঠী ও স্বজনদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন এবং তার আশ্বাসে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কাজে ফিরে যান ও নিহতের সহপাঠী এবং স্বজনরা অবরোধ তুলে নেন।

পরবর্তীতে সড়কে যান চলাচল ও হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপ-পুলিশ কমিশনার জাকির হোসেন মজুমদার।

শেবাচিমের ইন্টার্নি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রাকিন আহমেদ জানান, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাত সাড়ে ৯টায় হাসপাতালের প্রধান গেটে তালা ঝুলিয়ে কর্মবিরতি শুরু করা হয় এবং পরে সিটি মেয়রের আশ্বাসে কাজে যোগ দেন তারা।

অন্যদিকে, নিহত রিয়াদ হোসেনের স্বজন শাহানাজ পারভীন বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা রিয়াদ হোসেনের মরদেহ আটকে রাখে এবং পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত দুজনের চিকিৎসা কার্যক্রম স্থগিত রাখে। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের সহপাঠী এবং স্বজনদের পক্ষ থেকে জানানো হয় আহতদের সুষ্ঠু চিকিৎসা এবং মরদেহটি হস্তান্তরের দাবিতে সড়ক অবরোধ করি আমরা। পরে সিটি মেয়র এসে মরদেহ হস্তান্তর ও আহতদের চিকিৎসার আশ্বাস দিলে সড়ক অবরোধ তুলে নিই।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ জানান , আমি উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে তাদের শান্ত থাকতে বলি, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কথা শুনেছি এবং মারা যাওয়া স্কুলছাত্রের স্বজন-সহপাঠীদের কথা শুনেছি এবং তাদের বলেছি, বিষয়টি আইনিভাবে সমাধান করা হবে। তাদের আহ্বান করেছি যেন অসুস্থ্য রোগী ও সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হয় এমন কিছু না করার। ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কাজে ফিরেছেন এবং মারা যাওয়া কলেজছাত্রের স্বজন-সহপাঠীরা সড়ক ছেড়ে দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, ইসলামিয়া কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের তিন বন্ধু রিয়াদ হোসেন, হৃদয় ও ওসমান গনি মিলে শনিবার ১১ জুন দুপুর ১২টার দিকে কলেজের সামনে থেকে মোটরসাইকেল চালিয়ে শহরের উপকণ্ঠ তালতলী এলাকায় যাচ্ছিলেন,প‌থিম‌ধ্যে মহাবাজ এলাকায় মোটরসাইকেল‌টি নিয়ন্ত্রণ হা‌রি‌য়ে এক‌টি গা‌ছের সঙ্গে ধাক্কা লা‌গে এবং সড়কের বাইরে ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন তারা। সেখান থেকে আহত তিনজনকে উদ্ধার করে দুপুর দেড়টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক বেলতলা এলাকার মৃত আনসার আলীর ছেলে রিয়াদ হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন।

তাৎক্ষণিক চিকিৎসা না দেওয়ায় রিয়াদের মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ স্বজন ও সহপাঠীদের। পরিপ্রেক্ষিতে এ ঘটনার জেরেই নিহতের সহপাঠী ও স্বজনদের সঙ্গে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *