‘‘ প্রায় ১০/১২ দিন হলো বাড়িতে পানি উঠেছে । খুব কষ্টের মধ্য দিয়ে এই পানির ভিতর দিন কাটাচ্ছি। কচুরিপানা দিয়ে ধাপ বানিয়ে তার উপর গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগী নিয়ে বসবাস করছি। এখন এই ধাপের উপর রান্দি বাড়ি, ধাপের উপর খাই। ”
এভাবেই কথা গুলো বলছিলেন গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার কলাবাড়ী ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের দিপঙ্কর বালার স্ত্রী লক্ষ্মী বালা।
কলাবাড়ী ইউনিয়নের রামনগর, কাফুলাবাড়ী, শিমুলবাড়ী গ্রামের ৩ শতাধিক মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় চেয়ারম্যান মাইকেল ওঝা। তিনি জানান, শতাধিক পরিবার ঘর বাড়ি ছেড়ে রামনগর বাজার ও এর পাশের এলাকাগুলোর উঁচু জায়গায় এসে স্থান নিয়েছেন।
অনেকে বাড়ীতে কচুরিপানা দিয়ে ধাপ তৈরী করে তার উপর বসবাস করছে। অপরদিকে কলাবাড়ী ইউনিয়নের নিন্ম এলাকার প্রায় ৫ শতাধিক মাছের ঘের তলিয়ে গেছে।
রামনগর গ্রামের রেখা রানী বাগচী বলেন, প্রায় ২ সপ্তাহ ধরে পানি বন্দি অবস্থায় আছি। বাড়ীতে ধাপ বানিয়ে তার উপর খুব কষ্টে বসবস করছি। এখন পর্যন্ত সরকারি কোন ত্রান সহায়তা পাইনি।
কুমরিয়া গ্রামের পরিতোষ বিশ্বাস বলেন, ধার দেনা করে ১০ বিঘা জমিতে মাছের ঘের করেছিলাম। বন্যার পানিতে আমার মাছের ঘেরের সমস্ত মাছ ভেসে গেছে। আমি এখন পরিবার পরিজন নিয়ে কি ভাবে বাঁচবো ভেবে পাচ্ছি না।
এ বিষয়ে কলাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাইকেল ওঝা দৈনিক শতবর্ষকে জানান, আমার ইউনিয়নের রামনগর, শিমুলবাড়ী, কাফুলাবাড়ী গ্রামের প্রায় ৩ শতাধিক বন্যায় পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। প্রায় ৫ শতাধিক ছোট বড় মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ অনেক জনগণই মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আমি এসব জনগনের জন্য সরকারের সহায়তা কামনা করছি।
সার্বিক বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম মাহফুজুর রহমান দৈনিক শতবর্ষকে জানান, ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসন থেকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ৬৫ টি পরিবারকে ত্রান সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আগামীতেও উপজেলা প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে থাকবে।