পিরোজপুরের নেছারাবাদে অপহরণ চেষ্টার পাঁচদিনেও বিচার পাচ্ছে না ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র গোকুল মন্ডল।
অপহরণ চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে ঘটনা চাপা দিতে পরিবারকে হুমকি ধামকি দিচ্ছে বলে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ভুক্তভোগী পরিবার। এ ব্যাপারে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোন ফলাফল পাচ্ছে না বলে দাবি তাদের। ঘটনাটি ঘটেছে পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ উপজেলার সারেঙ্গকাঠী ইউনিয়নের করফা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা গৌরাঙ্গ লাল মন্ডলের ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ুয়া ছেলে গোকুল মন্ডল (১২) এর সাথে।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ গত (১লা ডিসেম্বর) শুক্রবার হনুমান বিকেল ২.৩০ ঘটিকার সময় খেলা শেষে বাড়িতে ফেরার সময় রাস্তা থেকে উঠিয়ে নিয়ে মাথায় ব্যাগ ভরে দিয়ে চোখ বেঁধে সারেংকাঠী গ্রামের নান্নু শেখের মুরগির ফার্মের পিছনের জঙ্গলে নিয়ে যান একই গ্রামের মোঃ জসিম হাওলাদার (২৮) ও মোঃ এনামুল মোল্লা (২২)। এসময় পথযাত্রী স্থানীয় দোকানদার টিটু মিয়া বিষয়টি দেখতে পেলে তাকে ছেড়ে দেয়। প্রত্যক্ষদর্শী টিটু মিয়া বলেন, আমি পুকুরের কাছে দাঁড়ানো ছিলাম। দুইজন লোক হাত ও পা ধরে নিয়ে যাচ্ছিল।
প্রথমে আমি বুঝেছিলাম বস্তা পরে দেখলাম ওকে ফার্মের পিছনে দিয়ে কলাবাগানের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমার চোখে উপর ওদের চোখ পড়ায় আমাকে দেখে বসে পড়েছে। আমি দেখে ফেলাই পরবর্তীতে তাকে ছেড়ে দিয়েছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী গোকুল মন্ডল বলেন, আমি পুরনো বাড়ি খেলাধুলা শেষে বাসায় ফিরছিলাম। আমাদের এলাকার জসিম এবং এনামুল আমাকে চোখ বেঁধে একটি ওষুধ খাইয়ে দিয়েছে কিন্তু কৌশলে ওষুধটি ফেলে দিয়েছি। তারপর ওরা আমাকে নাকে গামছা চাপা দিয়ে টানতে টানতে ফার্মের জঙ্গলের দিকে নিয়ে যায়।
গভীর জঙ্গলে নিয়ে যাবার জন্য ঘাড়ে কয়টি ধাক্কা দেয় এবং দুইটি কামড় দেয়। তারা দুজনেই মাদকাসক্ত ছিল বিধায় শরীরে কোন জোর ছিল না বলে আমি চলে আসতে পেরেছি। তাছাড়াও এলাকার এক দোকানদার আমাকে দেখে ফেলায় ভয় দেখিয়ে আমাকে ছেড়ে দেয়। ভুক্তভোগী গোকুলের বাবা গৌরাঙ্গ লাল মণ্ডল বলেন, আমি গত ২ ডিসেম্বর পাটিকেল বাড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ করেছি আজকে পাঁচ দিন অতিবাহিত হলেও কোন আইনি সহায়তা পায়নি। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের বিষয়টি জানালেও অভিযুক্তদের ভয়ে কেউ মুখ খুলছে না।
এলাকাবাসীরা জানান, গোকুল খুব মেধাবী ছাত্র। তার বাবা অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী হওয়ায় অপহরণ অথবা হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কিন্তু টিটু মিয়া দেখে ফেলায় তাকে ছেড়ে দেয়। এনামুল ও জসিম বখাটে স্বভাবের এবং সব সময় মাদকাসক্ত থাকেন। তাদের ভয়ে এলাকার কেউ কথা বলতে সাহস পাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জসিম ও এনামুলের বাড়িতে গেলে তাদেরকে বাড়ি পাওয়া যায়নি। পরিবারের লোক জানিয়েছে ঘটনার পর থেকে এখনো বাড়িতে আসিনি। নেছারাবাদ থানার পাটিকেলবাড়ী দরগা শরীফ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মুজিবুর রহমান জানান, এ বিষয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে পারব না। আমি ওই সময় ছুটিতে ছিলাম।
বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করেছেন থানার উপ-পরিদর্শক জুম্মার রমিজ। এ ব্যাপারে উপ-পুলিশ পরিদর্শক জুম্মা রমিজ তার মুঠোফোনে বলেন, আমি সরেজমিনে গিয়েছিলাম সে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি অথবা চেয়ারম্যানের মাধ্যমে মিউচুয়াল করতে চায়। উনি থানায় মামলা করতে চায় না। চেয়ারম্যানের সাথে আমার কথা হয়েছে স্থানীয়ভাবে বসে এই সমস্যার সমাধান করবে বলে তিনি জানিয়েছেন।