নড়াইলে দেড় বছরের শিশু তোয়ার মা কবরে বাবা জেলে!

নড়াইলে

 নড়াইলে মাকড়াইল গ্রামের তোয়ার মা করবে আর বাবা হত্যার মামলার আসামী হয়ে জেলের ঘানী টানছে। কিন্তু দেড় বছরের ছোট শিশু ছোট্ট তোয়ার ঠিকানা কি হবে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায় গত ৪ বৎসর আগে নড়াইল জেলার লোহাগড় উপজেলার মাকড়াইল গ্রামের তবিবার রহমানে ছেলে তুরস্ক প্রবাসী তোয়ার বাবা ফরিদ মৃধা (৩৫)’র সঙ্গে নড়াইল জেলার সদর উপজেলার যথুনাথপুর গ্রামের নুর জালাল মোল্যার মেয়ে তন্নী খানমের বিয়ে হয়েছিল।

গত ২৪ শে আগষ্ট শিশু তোয়ার মা তন্নী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তোয়ার বাবা তোয়ার মামা বাড়ীতে খবর দেয়। তোয়ার মামা রিয়াজ ও ফরিদ খবর শুনে তন্নীর স্বামীর বাড়ী মাকড়াইলে আসে।

তন্নীকে দেখে শুনে চিকিৎসা করার জন্য তাদের কাছে থাকা ব্যাগ থেকে স্যালাইন ও ইনজেকশন তার শরীরে প্রয়োগ করলে তার শারীরিক অবনতি হতে থাকে। সে সময়ে পরিবারের সকলে মিলে তন্নীকে এ্যাম্বলেন্স যোগে নড়াইল সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে (তন্নী) কে মৃত ঘোষনা করেন।

তন্নীর মৃত্যু ঘোষনার পর উভয় পরিবারের সমঝোতায় তোয়ার মা তন্নীকে তার বাবার বাড়ি যধুনাতপুর গ্রামে দাফন করা হয়। কিন্তু গত ২৫/০১/২১ ইং তারিখে তোয়ার মামা (মৃত তন্নির বড় ভাই) ফরিদ আশফাক বাদী হয়ে নড়াইল আমলী আদালতে ফরিদ মৃধা সহ ৫ জন কে আসামী একটি হত্যা মামলার আবেদন দাখিল করেন।

 নড়াইলে আদালত আবেদন আমলে নিয়ে লোহাগড়া থানায় ৩০২/৩৭ ধারায় এফআইআর করার আদেশ দেন। মৃত্যুর ৪ মাস পর তোয়ার মা তন্নীকে হত্যা করা হয়েছে বলে তোয়ার মামা ফরিদ আশফাক বাদী হয়ে মামলা করেন ।

মজার ঘটনা হলো তন্নীর মৃত্যুর ৪ দিন পর উভয় পক্ষ নোটারী পাবলিক এর মধ্যমে একটি আপোশ নামা করেন সেখানে উল্লেখ্য আছে তোয়ার মা তন্নী স্টোক করে মারা গেছেন। নোটারী পাবলিক রেজিঃ নং-৩০০ তাং৩১/০৮/২০২০।

তন্নী হত্যার মামলার স্বাক্ষীদের সাথে কথা হলে তারা জানান, তন্নী খুন হয়েছে কিনা আমাদের জানা নাই তন্নীকে অসুস্থ অবস্থায় তার ভাইদের উপস্থিতে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

সকল সত্যকে আড়াল করে তোয়ার মামা ফরিদ আশফাক নিজ স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য তোয়ার বাবা ফরিদ মৃধা সহ ০৫ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই মামলার প্রধান আসামী তোয়ার বাবা এবং তোয়ার একমাত্র ভরসা ফরিদ মৃধাকে লোহাগড়া থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরন করেছে। ফুটফুটে দেড় বছরের শিশু কন্যা তোয়া এখন হতাশার দিন গুনছে কখন ফিরবে তার মা তন্নী ও বাবা ফরিদ।

তোয়া তো জানে না তার মা কখনো আসবে না, কিন্তু তোয়ার শেষ আশ্রয় তার বাবা ও ফিরে আসবে না তাকে কি মিথ্যা মামলার আসামী হয়ে টানতে হবে জেলের ঘানি। তাহলে তোয়ার ঠিকানা কি হবে।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *