নড়াইলে ট্রাফিকের টি এস আই জাহিদ’র খুঠির যোর কোথায়,

 নড়াইলে দায়িত্বরত ট্রাফিকের টি এস আই জাহিদের বিরুদ্ধে ঘুষ দুর্নীতি ও নিরীহ সাধারণ মানুষদের হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, তিনি রাস্তায় দাঁড়িয়ে যানবাহনের কাগজপত্র চেক করার নামে সাধারণ মানুষদের হয়রানি করেন। সড়ক দিয়ে অবৈধ যানবাহন তার সামনে দিয়ে সহজে চলে যায় নগদ টাকার বিনিময়ে।

কিন্তু বৈধ কাগজপত্র থাকা যানবাহনের মালিক ও চালক হয়রানীর শিকার হন টাকা না দেয়ার জন্য। তবে হাতে নগদ ধরিয়ে দিলে কোন সমস্যা হয় না। টাকা না পেলে নানা অজুহাতে গাড়ি ঠেকিয়ে রেখে সময় ক্ষেপন সহ হয়রানী করেন। অভিযোগ রয়েছে,নিজের দ্বায়-দায়িত্ব এবং সরকারি নিয়ম-নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে যত্রতত্র রাস্তার উপর যানবাহন থামিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে প্রকাশ্যে চাঁদা আদায়ের। এদিকে দিনের পাশাপাশি রাতের আঁধারে শহরের হাতির বাগান মোড়,পুরাতন টার্মিনাল, মালীবাগের মোড়, ও ধোপাখোলার মোড় থেকে মটর সাইকেল, নসিমন, করিমন, ভটভটি, ইজিবাইক, ট্রাক, মাইক্রোবাস, সহ বিভিন্ন প্রকার যানবাহন আটক করে কাগজ-পত্র তল্লাশীর নামে গভীর রাত পর্যন্ত অর্থ আদায়ের অভীযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

হয়রানির স্বীকার এমন বেশ কয়েকজন যানবাহন চালকদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, গত কয়েক মাস ধরে টি এস আই জাহিদ নগদ টাকার লোভে এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন যেখানে সেখানে যানবাহন থামিয়ে চালকদের কাছ থেকে অবৈধভাবে অর্থ উর্পাজন করছে। ঘুষ দিলে সব ঠিক নতুবা সমস্যার শেষ নেই। অবৈধভাবে গাড়ী আটক করা থেকে শুরুকরে গাড়ি চালকদেরকে শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত করার ঘটনা নড়াইল শহরবাসীর কাছে নিয়মিত চিত্র হয়ে গেছে। তবে ঘুষের বিনিময়ে রেহাই পেতে নগত টাকা সঙ্গে না থাকলেও কোন সমস্যা নেই। আছে মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম বিকাশের সু-ব্যবস্থা।

ঘুষের ‘বনিবনা’ হলে সব ঠিক। আর ঘুষ দিতে না চাইলে অবৈধভাবে যানবাহন আটক করে গাড়ী পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে স্থানীয় থানায় অথবা পুলিশ ফাঁড়িতে।টি এস আই জাহিদ এর পূর্বে ছিলেন নড়াইল সদর পুলিশ ফাঁড়িতে। সেখানেও সাধারন মানুষকে হয়রানী,মাদক ব্যবসায়ীকে সহযোগীতা ও তার বাড়িতে যাতায়াত করার অভিযোগে ছিল তার বিরুদ্ধে।

তখন তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল।সংবাদ প্রকাশের পর পুলিশ ফাঁড়ির পাশে সেই আলোচিত মাদক ব্যবসায়ী ইয়াবা সম্্রট কামরুল ইয়াবা সহ গ্রেফতার হয়।সেই সদর পুলিশ ফাঁড়ি থেকে টি এস আই জাহিদ এখন ট্রাফিকের মত গুরুত্বপূর্ণ দায়ীত্বে। আর এখানে এসেই তিনি আরও বেপড়োয়া। নড়াইলে পদ্মাসেতু রেল লাইন নির্মান প্রকল্পে বালু সরবরাহি ড্রাম ট্রাকগুলোর অধিকাংশের কোন বৈধ কাগজ পত্র নেই। আর এই সুযোগে প্রতিটি গাড়িকে মাসিক সিষ্টেমে নিয়ে এসেছেন টি এস আই জাহিদ।গাড়ি প্রতি মাসিক ১ হাজার টাকা চাঁদা দিলে আর কোন ঝামেলা নেই।

আর নসিমন, করিমনের মাসিক চাঁদা পাঁচশ টাকা। কথা হয় আফিল কোম্পানীর ট্রাক চালক মিঠুর সাথে, তিনি এ প্রতিবেদক কে জানান, আমি যশোর থেকে আফিল কোম্পানীর ইট নিয়ে নড়াইলে ঢোকার মুখে হাতীর বাগান মোড়ে আমার ট্রাকটি আটক করেন টি এস আই জাহিদ।আটক করার পর কাগজ পত্র সঠিক থাকার পরেও বিভিন্ন অজুহাতে প্রায় দুই ঘন্টা আটকে রাখেন।তার পর দুই হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে আমার গাড়িটি ছেড়ে দেন। কথাহয় আলহামরা ব্রিকসের ইটভাটার ম্যানেজার বাদশার সাথে তিনি জানান, ইট ভাটা থেকে চলাচলরত সব গাড়িগুলো চলে টি এস আই জাহিদের সাথে মাসিক চুক্তিতে। এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, অপর এক ট্রাক চালক বলেন, টি এস আই জাহিদের চাঁদাবাজির কারণে আমরা অতিষ্ঠ। ফলে বাধ্য হয়ে পন্যপরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া নিতে হচ্ছে। ইজিবাইক সমিতির একজন নির্বাচীত সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,টি এস আই জাহিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই ।

বাইরে থেকে আশা ইজিবাইক আটকানোর পর কৌশলে চালককে হাতীর বাগান মোড়ে একটি মুদী দোকানে নিয়ে বসানো হয়। সেখানে বসেই ‘বনিবনার’ চেষ্টা চালায় টি এস আই জাহিদ। বনিবনা হলে নগদ নিয়ে ছেড়ে দেন।আর না হলে গাড়ি পাঠিয়ে দেন ফাঁড়িতে। এসকল অভিযোগ সম্পর্কে টি এস আই জাহিদের কাছে জানতে চাইলে তিনি সবকিছু অস্বীকার করে বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যান।এসব ঘুষের টাকা আদায়ের জন্য টি এস আই জাহিদের ব্যাক্তিগত লোক নিয়োগ করা আছে।

নড়াইলের সুযোগ্য পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় যোগদানের পরথেকে যেভাবে মাদক, সন্ত্রাস, অবৈধ যানবাহন বন্ধে নিরলস কাজকরে যাচ্ছেন তা সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে এবং একজন মানবিক পুলিশ সুপার হিসেবে নড়াইলবাসীর মনে তিনি যায়গা করে নিয়েছেন।সেখানে টি এস আই জাহিদের মত ঘুষখোর, দূর্ণীতিবাজ, মাদকের পৃষ্ঠ পোশকতাকারী অফিসার দিয়ে কিভাবে নড়াইলে জেলা কে অবৈধ যানবাহন মুক্ত করা ও সড়কে শৃংখলা ফিরবে তা নিয়ে জনমনে নানান প্রশ্নের জন্মদিয়েছে।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *