নিজের স্ত্রীকে ভারতের পতিতালয়ে বিক্রি করায় স্বামীর বিরুদ্ধে যশোরে মামলা। যশোরের অভয়নগরে নিজের স্ত্রী কে ভারতের এক পতিতালয়ে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত স্বামী উজ্জ্বল শিকদার নিজের স্ত্রী মোছা. ছালমা খাতুনকে পতিতালয়ে বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন তার স্ত্রী। এ ঘটনায় উজ্জ্বল শিকদারের বিরুদ্ধে যশোরে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন ট্রাইব্যুনাল-১ আদালতে মামলা করেছেন তার স্ত্রী ছালমা খাতুন (মামলা নং- ০৩/২০২০)। আসামী উজ্জ্বল শিকদারের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দিতে অভয়নগর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন ট্রাইব্যুনাল-১ (যশোর জেলা ও দায়রা জজ) এর বিজ্ঞ বিচারক টি এম মুসা (স্মারক নং- ৩৬২/ নাঃ শিঃ)।
মামলার বাদী ছালমা খাতুন জানান, ২০১২ সালের ২০ মার্চ অভয়নগর উপজেলার শুভরাড়া ইউনিয়নের ইছামতি গ্রামের মালেক শিকদারের ছেলে উজ্জ্বল শিকদারের সঙ্গে বিয়ে হয় মুসলিম শরিয়া মোতাবেক। উপার্জন বাড়াতে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে ও উজ্জ্বলকে ভারতে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। ছালমা খাতুন জানান, “২০১৮ সালের ২১ মার্চ আমার স্বামী উজ্জ্বল শিকদার আমাকে ফুসলিয়ে বিনা পাসপোর্টে বেনাপোল বর্ডার দিয়ে ভারতে নিয়ে যায়। প্রায় দুই বছর ভারতের রাজস্থান এলাকায় থাকার পর ২০২০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি উজ্জ্বল আমাকে নিয়ে ব্যাঙ্গালোর শহরে চলে আসে। ওই দিন ব্যাঙ্গালোর অসকোট পতিতালয়ে আমাকে বিক্রি করে সে পালিয়ে যায়। দীর্ঘ ২৩ দিন পতিতালয়ে মানবেতর জীবন-যাপন শেষে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি পতিতালয়ের এক দারোয়ানের সহযোগিতায় চোরাই পথে বেনাপোল হয়ে দেশে ফিরে আসি।” তিনি জানান, “উজ্জ্বল ও তাঁর ভাই আমার মত অনেক মেয়েকে প্রেমের বন্ধনে আবদ্ধ করে বিদেশে পাচার করে অর্থ উপার্জন করে থাকে।”
স্বর্ণালংকার ও জোরপূর্বক আদায় করা টাকা ফিরে পাওয়া সহ প্রতারক ও পাচারকারী স্বামীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি। স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহামুদুর রহমান মোল্যা জানান, বর্তমানে উজ্জ্বল শিকদার তাঁর বাবা-মা ও ভাইদের নিয়ে ইছামতি বাজার সংলগ্ন পাগলের মেলা প্রাঙ্গণের পাশে পাঁকা বাড়ি করে বসবাস করছে। প্রতিদিন তার বাড়িতে বহিরাগত অনেক নারী-পুরুষকে আনাগোনা করতে দেখা যায়। এ ব্যাপারে অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তাজুল ইসলাম আমাদের জেলা প্রতিনিধি জেমস আব্দুর রহিম রানাকে জানান, যশোর আদালত কর্তৃক মানব পাচার অপরাধ ও দমন আইনের ২০১২ এর ৬/৭/৮ ধারায় মামলার আসামী উজ্জ্বল শিকদারের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দ্রুত সময়ের মধ্যে দেওয়া হবে। করোনা পরিস্থিতর কারণে বিলম্ব হচ্ছে।