বুধবার (৫ আগস্ট) বাদ আসর টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয় এ মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আবুল বাসার খায়েরের সভাপতিত্বে, উক্ত আলোচনা ও দোয়া মিলাদ মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাবুল শেখ, মোঃ সোলায়মান বিশ্বাস উপজেলার চেয়ারম্যান, মোঃ ইলিয়াস হোসেন সাবেক মেয়র টুঙ্গিপাড়া পৌরসভা, মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন সাবেক সহ-সভাপতি উপজেলা আওয়ামীলীগ, মোঃ শুকুর আহম্মেদ সাবেক সহ-সভাপতি উপজেলা আওয়ামীলীগ, শেখ সাইফুল ইসলাম সভাপতি পৌর আওয়ামীলীগ, মোঃ ফোরকান আলী সাধারণ সম্পাদক পৌর আওয়ামীলীগ, শেখ জেয়াউলবশির টুটুল সাংগঠনিক সম্পাদক উপজেলা আওয়ামীলীগ, শৈলেন্দ্রনাথ মন্ডল, শেখ হেদায়েত উল্লাহ, আঃ সামাদ বিশ্বাস সাবেক দপ্তর সম্পাদক, মোঃ রেজাউল হক বিশ্বাস সভাপতি উপজেলা ছাত্রলীগ, শেখ বাবুল হোসেন খোকন সাধারণ সম্পাদক উপজেলা ছাত্রলীগ, নুরুল আমিন চাঁন মিয়া উপজেলা শ্রমিক লীগ সহ আওয়ামীলীগের সকল অঙ্গ সংগঠনের নেত্রি বৃন্দ।
দোয়া মাহফিলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ তার পরিবারের ৭৫সালের ১৫ই আগস্টের সকল শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন।
আজ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের ৭১ তম জন্মতিথি। এ উপলক্ষে দেশব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে। সারা দেশ জুড়ে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। টুঙ্গিপাড়াও যার ব্যতিক্রম নয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধেও বিশেষ দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা করা হয়। তারপর টুঙ্গিপাড়া পৌর এলাকা সহ সকল মসজিদে শেখ কামালের আত্নার মাগফিরাত কামনা ও মিষ্টান্ন বিতরণ করা হয়। এক নজরে শেখ কামালঃ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তিনি মুক্তিবাহিনীর অন্যতম সংগঠক ছিলেন। যুদ্ধকালীন সময়ে তিনি মহম্মদ আতাউল গণি ওসমানীর এডিসি হিসেবে কাজ করেন। 1975 সালের ১৪ জুলাই তিনি ক্রীড়াবিদ সুলতানা খুকিকে বিয়ে করেন। তিনি ঢাকা আবাহানী লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা। 1975সালের ১৫ অগাস্ট তিনি মৃত্যু বরণ করেন। 1975 সালের ১৫ই অগাস্ট ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতে নিহত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ ছেলে শেখ কামালকে স্মরণ করে তার বড় বোন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কামাল বেঁচে থাকলে সমাজকে অনেক কিছু দিতে পারত। বুধবার দুপুরে শহীদ শেখ কামালের ৭১তম জন্মবার্ষিকীতে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন। শৈশবের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা পিঠাপিঠি ভাইবোন ছিলাম। একসাথে উঠাবসা, খেলাধুলা, এক সাথে চলাফেরা, ঝগড়াঝাটি সবই আমরা করতাম। এক সাথে সাইকেল চালানো, এক সাথে ক্রিকেট খেলা, ব্যাডমিন্টন খেলা যেহেতু আমরা দুই ভাই বোন কাছাকাছি। “আমার পুতুল খেলায়ও ও যেমন আমার সাথে থাকতো। ওর সাথে ছোটবেলা থেকে বাকি সব খেলায় আমিও ওর সাথে এক সাথে খেলতাম।” বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী শেখ কামালের সাহসী রাজনৈতিক ভূমিকার কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, রাজনীতির ক্ষেত্রে তার (শেখ কামাল) যেই সাহসী ভূমিকা… কারণ ছয় দফা দেওয়ার পর থেকে যে আন্দোলন সংগ্রাম শুরু হয় এবং আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় যখন জাতির পিতাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয় তারপরে দেশে যেভাবে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল প্রতিটি সংগ্রামে কামালের অনবদ্য ভূমিকা রয়েছে।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছোটবেলা থেকেই কামাল শুধু খেলার মধ্যে তা না, সাংসারিক কাজেও আমার মাকে সব রকম সহযোগিতা করতো। ওই ছোট্ট বয়স থেকেই যে খুব দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতো। শেখ কামালের প্রতিভার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, কামাল আমার চেয়ে দুই বছরের ছোট। কিন্তু তার জ্ঞান-বুদ্ধি সবকিছুতে একটা পরিণতিবোধ ছিল। তার মেধা ছিল বহুমুখী। একদিকে যেমন ক্রীড়া সংগঠক, সাংস্কৃতিক জগতেও তার বহুমুখী প্রতিভা রয়েছে। স্পন্দন শিল্পগোষ্ঠী সে সৃষ্টি করেছে। ঢাকা থিয়েটার যখন হয় সেখানেও তার অবদান ছিল। সে নিজে অভিনয় করতো, গান গাইতো। সেতার বাজাতো। ‘খেলাধুলার মাঠে তার সবচেয়ে বড় অবদান। ধানমন্ডি এলাকায় কোনো রকম খেলাধুলার ব্যবস্থা ছিল না। সেই উদ্যোগ নেয় এবং ওখানকার সবাইকে নিয়ে আবাহনী গড়ে তোলে। মুক্তিযুদ্ধের পরেও কিন্তু এই আবাহনীকে আরও শক্তিশালী করে। একটা মানুষের মাঝে এই যে বহুমুখী প্রতিভা এটা সত্যিই বিরল ছিল। ’ রাজনৈতিক অঙ্গণে শেখ কামালের অবদানের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘রাজনৈতিক অঙ্গনে তার ভূমিকাও অপরিসীম। ৬ দফার পর থেকে যে আন্দোলন সংগ্রাম শুরু হয়; আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় যখন জাতির পিতাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ায় হয়, তারপর থেকে যেভাবে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল প্রতিটি সংগ্রামে কামালের অনবদ্য ভূমিকা রয়েছে। ‘ঢাকা কলেজে পড়ার সময় সে মিছিল নিয়ে চলে আসতো বটতলা, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। এমনকী ২৫ মার্চ রাস্তায় রাস্তায় ব্যারিকেড দেয়, মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয়। মুক্তিযুদ্ধের একটা সময় সরকারের নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধে সব বাহিনীর প্রধান কর্নেল আতাউল গনি ওসমানীর এডিসি হিসেবে দায়িত্বপালন করে। প্রতিটি ক্ষেত্রে তার অনবদ্য ভূমিকা রয়েছে। ’ শেখ কামাল নিজের জন্য কিছু চাইতো না জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ৭৫ সালের ৩০ জুলাই আমি আর রেহানা বাংলাদেশ থেকে জার্মানির উদ্দেশে রওয়ানা হই। জিজ্ঞেস করেছিলাম তোমাদের জন্য কী নিয়ে আসবো। আমার ডায়েরিতে লিখে দিল অ্যাডিডাস বুট নিয়ে আসবে আমার খেলোয়াড়দের জন্য। নিজের জন্য কোনোদিন সে কিছু চাইতো না। লেখাপড়া, খেলাধুলা, নাট্যচর্চা নিয়ে ব্যস্ত থাকতো। তার নাটক আমি নিজে দেখতে গেছি; উপস্থিত বক্তৃতা, তার ডিপার্টমেন্টে সুন্দর পরিবেশ সে সৃষ্টি করে রাখতো। প্রত্যেকটা ক্ষেত্রেই তার প্রতিভা ছিল। ’ শেখ হাসিনা বলেন, আজ কামাল আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু তার সৃষ্টি আবাহনী ক্লাব এখনো আছে। স্পন্দন শিল্পীগোষ্ঠীর অনেকেই মারা গেছে, নতুনভাবে আবার স্পন্দন গড়ে তোলা হয়েছে। ফিরোজ শাহীর ছেলেসহ যারা উদ্যোগ নিয়েছে, তাদের ধন্যবাদ জানাই। শেখ কামালের সঙ্গে শৈশবের কথা স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, আজ কামাল নেই। আমারা পিঠাপিঠি ভাই-বোন ছিলাম। একসঙ্গে ওঠাবসা, একসঙ্গে খেলাধুলা, চলাফেরা, ঝগড়াঝাটি সবই আমরা করতাম। একসঙ্গে সাইকেল চালানো, যেহেতু আমরা দুই ভাইবোন কাছাকাছি বয়সের। ছোটবেলার সব খেলায় আমিও ওর সঙ্গেই খেলতাম। তিনি বলেন, আমি যে সব একদিনে এভাবে হারাবো, এটা কখনোই চিন্তাও করতে পারিনি, কল্পনাও করতে পারিনি। ১৫ আগস্টের হত্যাকারীদের বিচার করতে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আপনারা একবার চিন্তা করে দেখেন? একটা মৃত্যু হলে তার বিচার দাবি করেন আমার কাছে। আর আমি কিন্তু বিচার পাইনি। আমরা বিদেশে ছিলাম। আমরা দেশে ফিরতে পারিনি। আমাদের দেশে ফিরতে বাধা দিয়েছে। এরপর আমি যখন ফিরলাম, আমি মামলা করতে পারিনি। কারণ মামলা করার কোনো অধিকার আমার ছিল না। আইন করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, যে এই মামলা আমি করতে পারবো না। ২১ বছর পর সরকারে এসে তারপর মামলা করে সেই বিচার করি। প্রতিটি রাজনৈতিক আন্দোলন সংগ্রামে ও মহান মুক্তিযুদ্ধে শেখ কামালের সক্রিয় অংশগ্রহণের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দৈনিক শতবর্ষ পরিবারের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর জ্যেষ্ঠ