চিত্রাপাড়ে ঘুষখোরদের দৌরাত্ব; সহকারি শিক্ষিকার আত্মহনন…!

সুদের বিষে বিষাক্ত হয়ে উঠেছে চিত্রা-পাড়ের জনপদ। ২০ জুলাই সোমবার বিকেলে লাঞ্ছনার শিকার হয়ে ঘরের আঁড়ায় ফাঁস দিয়ে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার খড়মখালী গ্রামের এক সহকারী শিক্ষিকা। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে বাগেরহাট মর্গে গ্রেরণ করেছেন। এক ছেলের মা শিক্ষিকা হাসিকনার স্বামী যুগল কান্তি স্থানীয় আজিজুলহক কিন্ডার গার্টেনের প্রধান শিক্ষক। আর্তনাদ করতে করতে তিনি জানান, বসবাসের জন্য জায়গা কেনা ও ঘর নির্মানের জন্য তিনি চিতলমারী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি (থ্রি স্টার), রত্মা,বিকাশ, রেফাফুল খাঁ সহ কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে খড়মখালী গ্রামে ৩২ শতক জমি ক্রয় করেন। টাকা সুদে নেওয়ার বিনিময়ে তাদের (স্বামী-স্ত্রী) উভয়ের কাছ থেকে ফাঁকা ১০টি চেকে স্বাক্ষর নেয় ওই ব্যক্তিগণ। দেনার চেয়ে ৩ থেকে ৪ গুণ টাকা পরিশোধ করেও শোধ হয়নি আসল টাকা।

স্বাক্ষর নেওয়া ফাঁকা চেকও ফেরত দেয়নি আজও। উল্টো অকথ্য ভাষায় মানষিক নির্যাতন চলতে থাকে। একপর্যায়ে সুদের টাকার দায়ে চিতলমারী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি (থ্রি স্টার) তার বসত বাড়িসহ ভিটেমাটি সব জোর কারে লিখে নেয়। এরপর থেকেই অন্য সুদে কারবারিরা চড়াও হয় তাদের উপর। এ ঘটনার জের ধরে শনিবার সকালে বিকাশ ও রত্মা তাকে ও তার স্ত্রীকে রাস্তায় ফেলে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও লাঞ্চিত করে এদিন দুপুরে তিনি বাড়ি না থাকার ফাঁকে অনুপ বসু ও রেফাজুল খা বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রী হাসিকনাকে নির্মম মানসিক নির্যাতন করে।

তিনি বাড়ি ফেরার পথে অনুপ ও রেফাজুলের সাথে তার দেখা হয়। তিনি বাড়িতে ফিরে দেখেন তার স্ত্রী হাসিকনা ঘরের আড়ায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে আছে। তিনি তার স্ত্রীর আত্মহত্যার জন্য যারা দায়ি তাদের বিচার দাবি করেছেন। এ ঘটনায় সেখানে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে শত শত মানুষ উপস্থিত হয়ে সুদখোরদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা এ ঘটনার জন্য দায়ী সুদখোরদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেছেন।

সুদখোরদের নির্যাতনে এর আগেও চিতলমারীতে একাধিক ব্যক্তি আত্মহত্যা করেন। অসংখ্য পরিবার নি:শ্ব হয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। এ ব্যাপারে চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর শরিফুল হক জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করা হয়েছে।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *