গোপালগঞ্জে সরকারি অনুমতি ছাড়াই মাটি কেটে জমির শ্রেণি পরিবর্তন করার অভিযোগ কতিপয় ভ‚মিদস্যুদের বিরুদ্ধে

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চর পুকুড়িয়া গ্রামে ভূমিদস্যুদের দৌরাত্ম্যে সরকারি অনুমতি ছাড়াই মাটি কেটে জমির শ্রেণি পরিবর্তন করার অভিযোগ উঠেছে। সরকারি অনুমতি না থাকলেও ওই সব জমি থেকে দেদারসে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। এতে ওই এলাকায় কৃষি জমির ওপর প্রভাবপড়া সহ আসছে বর্ষা মৌসুমে ফের মধুমতি নদীতে ভাঙ্গন দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা এলাকাবাসীর

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলার চরপুকুরিয়া গ্রামে রয়েছে বেশ কয়েকটি ইট ভাটা। তবে এক কিলোমিটারের মধ্যে একটি স্কুল থাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ছবেদ আলী ভূঁইয়া’র “মেসার্স মধুমতি ইট ভাটা” বন্ধ করার নির্দেশ দেয় প্রশাসন। নির্দেশ মোতাবেক তিনি ওই ইটভাটাটি বন্ধ করে দেন।

তবে এই সুযোগে ভূমিদস্যু “স্টার বিক্সস”-এর মালিক মুজাহিদ শেখ মধুমতি ইট ভাটার ও তার পার্শ্ববর্তী জমি থেকে সরকারি অনুমতি ছাড়াই ইস্কেভেটর দিয়ে ২০/২২ ফুট গভীর করে মাটি কেটে নেয়। এতে ওইসব কৃষি জমিসহ জনজীবনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও ওই সব জমির পাশ দিয়ে বয়ে গেছে মধুমতি নদী।

এ নদীতে ব্যাপক ভাঙ্গন থাকায় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের অন্যতম প্রেসিডিয়াম সদস্য ও গোপালগঞ্জ-০২ আসনের সংসদ সদস্য ড. শেখ ফজলুল করিম সেলিমের আন্তরিক সহযোগিতায় প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে পানি উন্নয়ণ বোর্ডের তত্ত¡াবধানে জিও ব্যাগ ফেলা হয়।

কিন্তু ওই সব জমি থেকে মাটি কাটায় যেকোন সময় জিও ব্যাগ ধসে গিয়ে আবারো শুরু হতে পারে নদী ভাঙ্গন। জমির মালিক রাজা মোল্যা জানান, আমি আমার জমি থেকে মাটি কাটতে বলিনি। কাউকে কিছু না বলেই রাতের আধাঁরে মুজাহিদ শেখ আমার জমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে যায়। চরপুখুরিয়া এলাকার হাফেজ শেখ বলেন, কাউকে কিছু না বলে মুজাহিদ শেখ জমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এতে জমির ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া পাশ্ববর্তী ইটভাটার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে ইটভাটার অফিস ও চিমনী ক্লিনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমরা দ্রæত মাটি কাটা বন্ধ করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবী জানাচ্ছি। একই এলাকার মিজান মল্লিক বলেন, সরকারি অনুমতি ছাড়া নিজের জমির মাটি কাটা যায় না।

কিন্তু ভূমি দস্যুরা কিভাবে মাটি কেটে নিচ্ছে আমার তা জানা নেই। এছাড়া পাশেই মধুমতি নদী রয়েছে। নদীর ভাঙ্গন ঠেকাতে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। কিন্তু যেভাবে মাটি কেটেছে এতে যেকোন সময় নদী ভাঙ্গন আবারো শুরু হবে। মেসার্স মধুমতি ইট ভাটার মালিক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ছবেদ আলী ভূঁইয়া বলেন, পাশে স্কুল থাকায় আমাকে ইটভাটা বন্ধের নির্দেশ দিলে আমি বন্ধ করে দেই। কিন্তু ভূমিদস্যুরা রাতের আধাঁরে আমার ইটভাটার পাশের জমি থেকে মাটি কেটে নেয়। এতে আমার ইটভাটার অফিস ও চিমনী ক্লিন ক্ষতি হয়েছে। আমার খুব বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। আমি দ্রæত মাটি কাটা বন্ধ করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি দাবী জানাচ্ছি। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মুজাহিদ শেখের ব্যবহারিত মুঠোফোনে (……৫৭৫) বারবার ফোন করলে তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিলন সাহা বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। ইচ্ছা করলেই কেউ সরকারি অনুমতি ছাড়া মাটি কেটে জমির শ্রেণি পরিবর্তন করতে পারবে না। এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *