রণিকা বসু(মাধুরী) চিতলমারী(বাগেরহাট)প্রতিনিধিঃ খুলনা বিভাগ চিংড়ি চাষের জন্য বিখ্যাত৷চিংড়ি রপ্তানিতে বাংলাদেশের রাজস্ব আয় অপরিসিম৷সরকার প্রতিবছর চিংড়ি রপ্তানি করে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করে৷বর্তমান করোনার প্রভাবে চিংড়ি ব্যবসায়ীরা পরেছে মহাসংকটে৷এই পরিস্থিতিতে চিংড়ি বাজার যেন হুমকির মুখে ৷চিংড়ি বাজারে গলদা বড় সাইজ আগে ছিল ১২০০ টাকা কেজি এখন ৫৫০ টাকা। ছোট সাইজ ৭০০ টাকা ছিল এখন ৪০০ টাকা। বাগদা বড় সাইজ ছিল ১১৫০ টাকা এখন ৫০০ টাকা। ছোট সাইজ ৬৫০ টাকা এখন ৪৫০ টাকা। শুক্রবার (৩ জুলাই) সকালে অনেকটা কষ্টের সঙ্গে কথাগুলো বলছিলেন মোংলার সুন্দরতলা গ্রামের ঘের মালিক বিজন বৈদ্য। তিনি জানান, করোনার কারণে বিদেশে মাছ রপ্তানি কম হওয়ায় অন্য মাছের তুলনায় খুবই কম দরে স্থানীয় বাজারে গলদা ও বাগদা চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে। বিগত বছরগুলোর তুলনায় গলদা ও বাগদা চিংড়ির দর অর্ধেকে নেমে এসেছে। বিজন বৈদ্য বলেন, স্থানীয় বাজারে অস্বাভাবিকভাবে কমেছে গলদা-বাগদা চিংড়ির দাম। মাছের দাম কমে যাওয়া, ঋণের চাপসহ না প্রতিকূলতায় চিংড়ি চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন চাষিরা। তার মতো অনেক ঘের মালিকরা জানান, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের গলদার চাহিদা না থাকায় খুলনা অঞ্চলের খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে রপ্তানিযোগ্য গলদা চিংড়ি। এতে নিরুৎসাহী হচ্ছেন বৃহত্তর খুলনার ক্ষতিগ্রস্ত চিংড়ি চাষিরা। চাষের খরচ না ওঠার দুশ্চিন্তায় তারা। মহানগরীর ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজারের মাছ বিক্রেতা সুমন বলেন, বিদেশে গলদা বাগদার চাহিদা কমে গেছে। যে কারণে রপ্তানিযোগ্য বড় বড় বাগদা-গলদা খোলা বাজারে অনেকটা সস্তায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সুপার সাইক্লোন আম্পানের প্রবল জলোচ্ছ্বাসে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে হাজার হাজার মাছের ঘের। ঝড়ের দিনে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি ব্যাপকভাবে জোয়ারের পানি বেড়ে যাওয়ায় মাছের ঘের ডুবে সব মাছ বের হয়ে গেছে। এতেও চাষিদের ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। খোলা বাজারে বড় বড় গলদা-বাগদার দাম কম হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করে ইকবাল নগর এলাকার বাসিন্দা শামীম হোসেন বলেন, আগে আমাদের অঞ্চলের চাষ হওয়া গলদা বাগদা বিদেশিরা খেতেন। এবছর দাম কম হওয়ায় আমরা খেতে পারছি। বড় আকারের গলদা সাড়ে ৫০০ টাকা কেজি দরে কিনতে পারছি। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের চিংড়ি বেচা-কেনার সর্ববৃহৎ আড়ৎ বাগেরহাটের ফকিরহাটের ফলতিতা মৎস্য আড়ৎ সূত্র জানায়, প্রতিদিন এ আড়তে পাঁচ হাজার মেট্রিক টনের মতো সাদা মাছ ও চিংড়ি বেচা-কেনা হয়। খুলনা, বাগেরহাট, নড়াইল, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার চিংড়ি চাষি ও ব্যবসায়ীরা এ আড়তে কেনা-বেচা করেন। মাছের উৎপাদন ও দাম কমে যাওয়ায় বর্তমানে বেচা-কেনা অর্ধেকে নেমে এসেছে। এদিকে, চিংড়ি রপ্তানিকারকরা জানান, করোনার কারণে দেশের দ্বিতীয় রপ্তানিপণ্য চিংড়ি রপ্তানিতে এসেছে স্থবিরতা। ক্রমান্বয়ে সাদা সোনাখ্যাত চিংড়ির রপ্তানি নিম্নমুখী। করোনা ছাড়াও বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশের চিংড়ির কদর কমছে। বিশ্ব বাজার আবারও বাংলাদেশের দখলে আনতে বাগদার পাশাপাশি ভেনামি চিংড়ি চাষের প্রয়োজন। ভেনামি চিংড়ি চাষে খরচ ও দাম কম আর উৎপাদন বেশি হওয়ায় এর চাহিদা বেশি। মৎস্য অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় অফিস সূত্রে জানা যায়, খুলনা বিভাগের ১০ জেলার ৪টি জেলায় ‘সাদা সোনা’ খ্যাত বাগদা চিংড়ির চাষ হয়। এর মধ্যে খুলনায় ৩২ হাজার ৮শ ৯৬.০২ হেক্টর জমিতে ২০ হাজার ৪৩০টি ছোট বড় বাগদা চিংড়ি ঘের, সাতক্ষীরায় ৬৬ হাজার ৮৩২ হেক্টর জমিতে ৫৪ হাজার ৯৩২টি ঘের, বাগেরহাটে ৫১ হাজার ৮৮০ হেক্টর জমিতে ৩৫ হাজার ৬৮২টি ও যশোরের ৭শ ৫৮ হেক্টর জমিতে ৮৯৩টি ঘের রয়েছে। চিংড়ি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ক্রীমসন রোজেলা সীফুডস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. শাহীন হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে দেশে চিংড়ি শিল্পে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বহির্বিশ্বে একের পর এক ক্রয়াদেশ বাতিলের কারণে ভয়াবহ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে চিংড়ি প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠানগুলো। তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে আমাদের চিংড়ির চাহিদা কমে আসছে। বাংলাদেশের প্রতিযোগী ভারত, ইকুয়েডর ও ভিয়েতনামে ভেনামি জাতের চিংড়ির ব্যাপক চাষ হচ্ছে। ভেনামি চাষে উৎপাদন খরচ ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কম হয়। ফলে কম মূল্যে সরবরাহ করার কারণে বাজার দখলে ভেনামির সঙ্গে পেরে উঠছেন না আমাদের দেশের গলদা ও বাগদা চিংড়িচাষিরা। গলদা ও বাগদা চিংড়ি দিয়ে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। বিশ্ববাজারে ভেনামি চিংড়ি সরবরাহ বৃদ্ধি বাংলাদেশের চিংড়ির দাম ও চাহিদা দুটোই কমিয়ে দিতে ভূমিকা রেখেছে। এ অবস্থায় আমাদের দেশে ভেনামি চিংড়ি চাষ শুরু করার কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী বেলায়েত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, খুলনায় চিংড়ি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৫৯টি। এর মধ্যে ২৩টি বর্তমানে চালু রয়েছে। করোনার কারণে এসব প্রতিষ্ঠান চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।করোনার এই র্দুসময় অতিবাহিত হলে পর আবার সুসময় ফিরবে বলে মনে করা হচ্ছে তাহলেই চাষি বাঁচবে৷বাড়বে রাজস্ব আয়৷

আরও সংবাদ

İstifadəçi rəyləri Pin Up casino seyrək göstərilən xidmətlərin keyfiyyətini təsdiqləyir. azərbaycan pinup Qeydiyyat zamanı valyutanı seçə bilərsiniz, bundan sonra onu dəyişdirmək mümkün xeyr. pin-up Bunun üçün rəsmi internet saytına iç olub qeydiyyatdan keçməlisiniz. pin up Además, es de muy alto impacto y de una sadeed inigualable. ola bilərsiniz