স্টাফ রিপোর্টারঃ খুলনার খালিশপুর হাউজিং বাজার ১ নং বিহারী ক্যাম্পের সুমন হোসেন বাপ্পি হত্যাকান্ডের সুষ্ঠ তদন্ত চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে নিহত বাপ্পির পরিবার।গতকাল খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন বাপ্পির মায়ের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মোঃ ইকবাল হোসেন। সংবাদ সম্মেলনের লিখিত কাগজে মামলায় ১৪ জন আসামীসহ গুরুত্বপুর্ন আসামীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে। এদিকে বাপ্পির পরিবার থেকে মিথ্যা সংবাদ সম্মেলন ও নিরিহ মানুষকে মামলায় জড়ানোর ঘটনায় নানা প্রতিক্রিয়া ও আলোচনা, সমালোচনা শুরু হয়েছে।
নিরিহ মানুষকে হয়রানি না করার জন্য প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে আর্জি করেছ এলাকার সাধারণ মানুষ। ঘটনার বিবারনে জানাযায়, গত ১৬ জুন ৭ নং ক্যাম্পের কাছে হাউজিং বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী সুজন ও সুমনকে মারধোর করে ১ নং বিহারী ক্যাম্পের মোঃ সবুজের পুত্র বাপ্পি। পরেরদিন সকালে আবারো ৭ নং বিহারী ক্যাম্পে দেশয়ী অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয় বাপ্পি। এ সময় ক্যম্পের বাসিন্দারা তাকে ধাওয়া দেয়। এ ঘটনায় বাপ্পি তার কোমেরে থাকা চাপাতি দিয়ে ক্যাম্পের লোকজনের উপর হামলা চালালে ক্যাম্পের বাসিন্দরা সংবদ্ধ হয়ে বাপ্পির কাছ থেকে চাপাতি কেড়ে নিয়ে তাকে জখম করে। গুরুত্বর জখম অবস্থায় তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে বাপ্পির অবস্থা অবনতি ঘটলে ওইদিন রাতে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। ৪ দিন পর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাপ্পির মৃত্যু হয়।
এর আগে ১৮ জুন বাপ্পির স্ত্রী রানি খাতুন বাদী হয়ে ১২ জনের নামে খালিশপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। সে অভিযোগটি এখন হত্যা মামলায় হিসেবে তদন্ত করছে খালিশপুর থানার পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক কাজী বাবুল হোসেন মামলার ১০ জন এজাহার নামীয় আসামীকে আলমনগর মোড় থেকে আটক করে আদালাতে পাঠান। শাবানা ও নাদিম নামে দুই আসামী পলাতক রয়েছে। মামলায় ১২ জন এজাহার নামীয় আসামী থাকলেও সংবাদ সম্মেলনে ১৪ জনের নাম উল্লেখ্য করার বিষয়ে খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাব্বিরুল আলম জানান, মামলায় ১২ জনের নাম উল্লেখ্য ও অজ্ঞাতনামা কয়েকজনরে বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। অহেতুক কোন নিরিহ মানুষকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হবেনা বলে তিনি জানান। তিনি আরো বলেন বাপ্পি খালিশপুর থানার একজন তালিকা ভুক্ত সন্ত্রাসী, তার নামে মাদক, চাঁদাবাজী, হত্যা, মারামারিসহ ১০ টি মামলা রয়েছে। সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কারনে এলাকাবাসীর সাথে বাপ্পির সম্পর্ক ভালো ছিলনা।
এলাকাবাসী ও হাউজিং বাজারের ব্যবসায়ী মোঃ নাদিম জানান, বাপ্পি বখাটে ছিল, ক্যাম্পের অনেককে মারধোর, তাদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়া এবং মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল। প্রতিবেশী গৃহিনী নুসরাত বেগম জানান, বাপ্পি বদমেজাজী ও বখাটে ছিল, এলাকায় প্রায় নিরিহ মানুষের সাথে মারামারি করতো। এদিকে বাপ্পি মারা যাওয়ার পর তার পরিবারের বিরুদ্ধে নিরিহ মানুষকে মামলায় জড়ানো ভয়ভিতি দেখানো এবং বাপ্পির দোসররাসহ বর্তমান একটি কুচক্রি মহল মিথ্যা মামলায় জড়ানোর ভয় দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ তোলে এলাকাবাসী। ১২ নং ওয়ার্ড যুবলীগের আহবায়ক ও শিক্ষক হোসাইন সবুজ জানান তার দায়ের করা একটি মামলার আসামী ছিল নিহত বাপ্পি। গত কয়েকদিন আগে মামলার বাদী ও তার পরিবার মামলায় নাম দেয়া হবেনা বলে তার কাছে ২ লাখ টাকা দাবি করে। তিনি টাকা দিতে অপরগতা প্রকাশ করায় তাকে প্রতিনিয়ত মামলায় জড়ানোর হুমকি দেয়া হচ্ছে। এ বিষয়টি তিনি থানার ওসিকে জানিয়েছেন বলে তিনি জানান।
এ ঘটনায় গত ২৭ জুন খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ৭ নং ক্যাম্পের বাসিন্দরা। ১ ও ৭ নং ক্যাম্পের নিরিহ বাসিন্দারা নিরিহ মানুষকে বাচাঁতে এবং ঘটনার সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত আপরাধীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন তারা