কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
উনজিলা বেগম (৬৫) কোটালীপাড়া উপজেলার তারাশী গ্রামের মৃত হাকিম মোল্লার বিধবা স্ত্রী। একদিকে শাররীক প্রতিবন্ধী অন্যদিকে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী হয়ে আছেন দীর্ঘদিন। ঘরে রয়েছে ৩০ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী অবিবাহিত মেয়ে, এক ছেলে, ছেলের বউ ও ১০ বছর বয়সী নাতি। ছেলে শহিদুল রাজমিস্ত্রীর সহকারী হিসেবে কাজ করে। পুরো পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব ছেলে শহীদুলের উপর। করোনার কারনে ছেলের কাজ বন্ধ। অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটে তাদের। এরই মধ্যে স্বামীর রেখে যাওয়া শেষ সম্বল ২০ শতক জমির ধান পেকে গেছে। প্রতিবছর উনজিলা বেগমের ভাইয়েরা এসে ধান কেটে দিয়ে যায়। এবার তারা আসতে পারেনি করোনা ভাইরাসের কারনে। বছরের বেশির ভাগ সময়ের খোরাক এই ধান কাটতে না পেরে দিশেহারা হয়ে পড়েন উনজিলা বেগম। এ কান ও কান করে এই খবর চলে যায় সেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন জ্ঞানের আলো পাঠাগারের সদস্যেদের কাছে। জ্ঞানের আলো পাঠাাগারের সভাপতি সুশান্ত মন্ডলের নের্তৃত্বে পাঠাগারের ২০ জন সদস্য আজ ১৩ মে ২০ বুধবার সকালে সূর্য ওঠার আগেই কাচি নিয়ে ছুটে যায় উনজিলা বেগমের ধান ক্ষেতে। তারা ধান কেটে সেই ধান পৌচ্ছে দেয় উনজিলা বেগমের বাড়িতে। লিপন মোল্লা (৩৫) উনজিলা বেগমের প্রতিবেশী। পেশায় ভ্যান চালক। উনজিলা বেগমের পাশেই তার জমি। লোকবলের অভাবে তিনিও ধান কাটতে পারছিলেন না। লিপন মোল্লা জ্ঞানের আলো পাঠাগারের সভাপতি সুশান্ত মন্ডলকে অনুরোধ করেন তার জমির ধানও কেটে দিতে। অসহায় মানুষের অনুরোধ ফেলতে পারেনি জ্ঞানের আলো পাঠাগারের সদস্যরা। লিপন মোল্লার ১০ শতক জমির ধানও কেটে বাড়ি পৌচ্ছে দেয় জ্ঞানের আলো পাঠাগারের সদস্যরা।
জ্ঞানের আলো পাঠাগারের সভাপতি সুশান্ত মন্ডল বলেন, অর্থ ও লোকবলের অভাবে ধান কাটতে পারছিলেন না তারা। এই খবর পেয়ে আমাদের সদস্যরা সবাই মিলে তাদের ধান কেটে বাড়িতে পৌছে দেই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহানুর শেখ বলেন, জ্ঞানের আলো পাঠাগারের সদস্যরা বছরব্যাপী এলাকায় নানা সেবামূলক কাজ করে থাকেন। এরই অংশ হিসেবে তারা আজ দুই অসহায় পরিবারের ক্ষেতের পাকা ধান কেটে দিলেন। জ্ঞানের আলো পাঠাগারের এই সেবামূলক কাজের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।