কোটালীপাড়ায় জীবিত প্রতিবন্ধী নারীকে মৃত্যু দেখিয়ে ভূয়া সনদের মাধ্যমে ভাতা বাতিল

গোপালগঞ্জে জীবিত এক প্রতিবন্ধী নারীকে মৃত দেখিয়ে ভূয়া মৃত্যু সনদের মাধ্যমে ভাতা বাতিল করে অন্যের নামে প্রতিস্থাপন করার অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় ইউপি সদস্যর বিরুদ্ধে।

এঘটনায় এলাকায় চলছে আলোচনা সমালোচনা। উপজেলা প্রশাসন বলছে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় সেতারা বেগম নামে এক প্রতিবন্ধী নারীকে মৃত্যু দেখিয়ে তার প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড বাতিল করা হয়েছে। বিগত ৮ মাস যাবৎ তিনি প্রতিবন্ধী ভাতা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন।

অপরদিকে তার নাম পরিবর্তন করে নকুল চন্দ্র দাস নামে অন্যজনকে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড প্রতিস্থাপন করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যান রাফেজা বেগম ও স্থানীয় ইউপি সদস্য হান্নান মিয়া সেন্টুর বিরুদ্ধে। কোটালীপাড়া উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।

সেতারা বেগম আমতলী ইউনিয়নের ছোট দক্ষিণপাড়া গ্রামের আব্দুল মান্নান হাজরার স্ত্রী। পূর্বের চেয়ারম্যান ওই প্রতিবন্ধীর নামে ভাতার কার্ড করে দেন। উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাফেজা বেগম এর স্বাক্ষরিত মৃত্যুর সনদে ছোট দক্ষিণ গ্রামের মান্নান হাজরার স্ত্রী ও ৪ নং ওয়ার্ডের পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত্যু হামিজ এর মেয়ে সেতারা বেগমকে বিগত ২৫/০৯/২০২২ ইং তারিখে মৃত্যু দেখিয়ে ওয়ারিশ সনদ প্রদান করে।

অথচ ওই প্রতিবন্ধী নারী সরকারের অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতার সুবিধা পেয়ে আসছিলেন। উপকার ভোগীর আইডি নম্বর ০৩৩৫০০০৮৭০৫, বই নং ১৬১৯। চেয়ারম্যান মৃত্যু সনদ দেওয়ার কারণে তার প্রতিবন্ধী ভাতা সুবিধা বন্ধ হয়ে গেছে। ভুক্তভোগী সেতারা বেগম বলেন, আমি জীবিত থাকার পরও আমাকে মৃত দেখিয়ে আরেকজনের নামে টাকা দেয়, কিন্তু আমি জীবিত আছি। এলাকাবাসী বলেন, সেতারা বেগম জীবিত থাকার পরও চেয়ারম্যান ও মেম্বার মৃত দেখাল। সেতারা বেগম গরিব মানুষ। তার কোনো ছেলেমেয়ে নাই। এই টাকা দিয়ে তার সংসার চলে।

তারা আরো বলেন, আমরা জানতে পেরেছি টাকার বিনিময়ে সেতারা বেগম এর প্রতিবন্ধী ভাতা বাতিল করে অন্যের নামে দিয়েছে। যারা তাকে মৃত্যু দেখিয়েছে আমরা এর বিচার চাই। এ বিষয়ে ৪ নং ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ সুজন বিশ্বাসের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হান্নান মিয়া সেন্টু আমাকে বলেন সেতারা বেগম মারা গেছে, মৃত্যু রেজিস্ট্রার খাতায় উঠাও, আমি সরল বিশ্বাসে মেম্বারের নির্দেশ পালন করেছি।

ইউপি সদস্য হান্নান মিয়া সেন্টু বলেন, প্রথমবারের মতো এমন ভুল করেছি। সামনের দিকে সর্তকতার সাথে কাজ করবো। এ বিষয়ে আমতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাফেজা বেগম এর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এটা ভুল বশত হয়েছে, আমরা এটা ঠিক করে দিবো, এ নিয়ে কথা বলার দরকার নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, জীবিতকে মৃত্যু দেখিয়ে অন্যের নামে ভাতা করার কোনো সুযোগ নেই, তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *