আদালতের আদেশে ডিআইজি মিজানুর রহমানকে অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতি

আদালতের আদেশে বাংলাদেশ পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমানকে অতিরিক্ত আইজিপি (চলতি দ্বায়িত্ব) পদে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে।

শনিবার দুপুরে এতথ্য নিশ্চিত করে পুলিশ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী ১১ অক্টোবর থেকে আমি অতিরিক্ত আইজিপি (চলতি দ্বায়িত্ব) হিসাবে দ্বায়িত্বভার গ্রহন করেছি।

গত ১ সেপ্টেম্বর ডিআইজি মিজানুর রহমানকে পরবর্তী পদে পদোন্নতির প্রশাসনিক আপিলেট ট্রাইব্যুনালের রায় বহাল রেখে লিখিত রায় দেন আপিল বিভাগ। যার মাধ্যমে তার পরবর্তী উচ্চ পদে পদোন্নতিতে কোন বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার মৌসুমী ফাতেমা কবিতা।

তিনি বলেন, প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল ও আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ও ডিআইজি মিজানুরের পক্ষ এসেছে। পরে আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় যথার্থ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এর ফলে ডিআইজি মিজানের পরবর্তী পদোন্নতিতে আর কোন আইনি বাধা নেই।

পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, পুলিশ কর্মকর্তা ডিআইজি মিজানুর রহমান গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। ছোট বেলা থেকে মেধাবী হওয়ায় প্রতি শ্রেনীতে প্রথম স্থান পেয়েছেন। ১৯৮৯ সালে তিনি পুলিশের সার্জেন্ট পদে যোগ দেন। বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকায় তৎকালীন সময়ে মিজানুর রহমানের কোন পদোন্নতি হয়নি। কারণ তার বাড়ি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায়।

পরে ১৭ তম বিসিএস পরীক্ষায় পুলিশ ক্যাডারে ১ম স্থান অধিকার সহ সম্মিলিত মেধা তালিকায় (সকল ক্যাডারের মধ্যে) ৪র্থ স্থান অধিকার করে ১৯৯৮ সালে পুলিশ ক্যাডারে যোগদান করেন। তিনি ২০০৩ সালে এডিশনাল পুলিশ সুপার ও ২০০৬ সালে পুলিশ সুপার হিসাবে পদোন্নতি লাভ করেন। সর্বশেষ হাইকোর্টের রায়ে ২০১৮ সালের ৩ জুলাই ডিআইজি হিসাবে র‌্যাংক ব্যাজ পরেন তিনি।

মো. মীজানুর রহমান ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় গাজীপুর জেলায় কর্মরত থাকায় জামায়াত-বিএনপি’র দলীয় সন্ত্রাসীরা কারচুপি করে গাজীপুরের সংসদীয় আসনগুলো লাভ করতে ব্যর্থ হয়। এর ফলে নির্বাচন সমাপ্তির তিন দিনের মাথায় তাকে এপিবিএন, খাগড়াছড়ি বদলী করে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা শুরু করে। তাকে মোট ১৫ (পনের) বা বদলী করে অপারেশনাল কার্যক্রম থেকে বিরত হয়েছিল। শুধুমাত্র ডাম্পিং পোষ্টিং করেই তারা ক্ষান্ত হয়নি। তাকে শেখ হাসিনার বডিগার্ড এবং শেখ সেলিমের গোয়েন্দা চিহ্নিত করে সাময়িক বরখাস্ত করে। এছাড়া পদোন্নতি বঞ্চিত ও চাকুরীচ্যুত করার লক্ষ্যে ৫-৬ বার বিভাগীয় মামলা রুজু করে। তাদের অত্যাচারের মাত্রা চরম আকার ধারন করলে চাকুরি থেকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নিলে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বিগত জামায়াত-বিএনপি সরকারের সাথে হাওয়া ভবন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অত্যাচার, নির্যাতন ও নিপীড়নের মাত্রা চরম আকার ধারন করলে, তিনি চাকুরী থেকে রিজাইন করার সিদ্ধান্ত নিলে মীজানুর রহমানকে চাকুরী থেকে রিজাইন না দেয়ার নির্দেশ দেন। পরে তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো সম্পূর্ন মিথ্যা প্রমানিত হওয়ায় অভিযোগ হতে স্ব-সম্মানে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। এমনকি জামায়াত- বিএনপি তার স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছিল।

এবিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন,
আমার প্রতি অবিচার ও অত্যাচারের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করলে, তিনি ধৈর্য ধারন করে সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে বলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও প্রশাসনের মধ্যে লুকিয়ে থাকা বিএনপি-জামায়াতের অনুচররা বার বার আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে। কিন্তু দেশের উচ্চ আদালত সেই ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে তার উপযুক্ত পদ মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আমাকে অতিরিক্ত আইজি পদে পদোন্নতি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তাই আদালতের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *